লং আইল্যান্ডে প্রথম বারের মতো আয়োজিত বাংলাদেশি আমেরিকান ফেস্টিভ্যাল ২০২৩ এর কনেভনর ও মূলধারার রাজনীতিক গিয়াস আহমেদ বলেছেন, লং আইল্যান্ডে বাংলাদেশ কমিউনিটি ক্রমবর্ধমান। ব্যবসা-বাণিজ্য, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে বাংলাদেশিরা ধীরে ধীরে জায়গা করে নিচ্ছে। মূলধারার রাজনীতিতেও পিছিয়ে নেই বাংলাদেশিরা।
কিন্তু সেই বাংলাদেশিদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং কৃষ্টি লং আইল্যান্ডের অন্যান্য অভিবাসীর কাছে প্রায় অপিরিচিত থেকে গেছে। তাই আমরা লং আইল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশিরা প্রথম বারের মতো আমাদের দেশের কৃষ্টি, কালচারকে তুলে ধরতে ‘বাংলাদেশি আমেরিকান ফেস্টিভ্যাল ২০২৩’ এর আয়োজন করেছি। আজ আপনাদের উপস্থিতি আমাদেরকে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। আমরা ভবিষ্যতেও এ ফেস্টিভ্যাল অব্যাহত রাখবো। গত শনিবার বেবিলন টাউন হল মাঠে আয়োজিত ফেস্টিভ্যালে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গিয়াস আহমেদ এসব কথা বলেন।
ফিতা কেটে এবং বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন বেবিলন টাউন হলের সুপারভাইজার রিড শেফার্ড, স্টেট সিনেটের মনিকা গঞ্জালেস এবং মেলার কনভেনর গিয়াস আহমেদ। এই সময় উপস্থিত ছিলেন মেলার সদস্য সচিব রিয়াজ মাহমুদ, চীফ কোঅর্ডিনেটর গোলাম ফারুক শাহীন, উপদেষ্টা ডা. ওয়াদুদ ভূইয়া, নাফিউল ইসলাম পান্না, নাসির আলী খান পল, কো-কনভেনর আসেফ বারী টুটুল, মোহাম্মদ মহসীন, মিয়া আলম পাখি, আসাদুল বারী আসাদ, কালচারাল চেয়ারম্যান ইশতিয়াক রুমি।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির প্রতিনিধি জিম কারেন্ট, ডেপুটি স্পিকারের প্রতিনিধি ক্রিস্টান মার্গেজ, কাউন্সিলম্যান ডুয়েন গেগি, অ্যাসেম্বলিওম্যান ক্যাম্বেলি জিম প্যারির প্রতিনিধি জেনিফার এল মার্থিন, জন ওয়ার্ড, সাফোক কাউন্ট্রির ইলেকশন কমিশনার ক্যাভিন মারফি, নবযুগ পত্রিকার সম্পাদক শাহাব উদ্দিন সাগর, এটর্নী মঈন চৌধুরী, শো টাইম মিউজিকের প্রেসিডেন্ট আলমগীর খান আলম, বিশিষ্ট বিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী নূরুল আজিম, জেবিবিএর সাবেক সভাপতি আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম, ডা. মাসুদুর রহমান, বারী হোম কেয়ারের ভাইস চেয়ারম্যান মুনমুন হাসিনা বারী, ইমিগ্র্যান্ট এল্ডার হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট নুসরাত আহমেদ নিপা, আব্দুস সবুর, মিজানুর রহমান, মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, মাকসুদুল হক চৌধুরী, জাহাঙ্গীর সরোয়ার্দী, শাহাদাত হোসেন রাজু, মহিউদ্দিন আহমেদ, মজিব চৌধুরী রানা, নিপা আহমেদ, নাজমুন আলিম, জিয়াউল ইসলাম জুয়েল, আব্দুল্লাহ আল মামুন, জাহাঙ্গীর আলম জয় প্রমুখ।
গিয়াস আহমেদ মেলায় আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা প্রথমবারের মতো এই মেলার আয়োজন করেছি। আপনাদের সহযোগিতায় আজকে মেলা সফল হয়েছে। আগামী দিনে আমরা এই ধরনের মেলার আয়োজন করবো। এ সময় মেলায় সহযোগিতাকারীদের ধন্যবাদ জানান তিনি। রিচ শেপার্ড বলেন, আমাদের এলাকায় বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়ছে। আজকের অনুষ্ঠানে এসে আমার কাছে ভালো লাগছে। তিনি বাংলাদেশিদের মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান। মনিকা মার্টিনেজও বাংলাদেশিদের মূলধারায় সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশিরা অত্যন্ত পরিশ্রমী। আপনাদের জন্য আমার অফিসের দরজা সব সময় খোলা।
ডা. ওয়াদুদ ভুইয়া এই ধরনের সুন্দর আয়োজনের জন্য আয়োজক কমিটির সব সদস্যকে ধন্যবাদ জানান। রিয়াজ মাহমুদ মেলা সফল এবং সার্থক করার জন্য সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
গোলাম ফারুক শাহীনও সবাইকে ধন্যবাদ জানান, তাদের প্রথম আয়োজনের সহযোগিতা করার জন্য। অনুষ্ঠানে কনভেনর গিয়াস আহমেদ এবং প্রধান সমন্বয়কারী গোলাম ফারুক শাহীনকে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন জেনিফার এল মার্টিন। এছাড়া মেলায় সহযোগিতা করার মেলা কমিটির পক্ষ থেকে থেকেও সংশ্লিষ্টদের সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়।
শামসুন নাহার নিম্মি, আশরাফুল হাসান বুলবুল ও শারমিন রেজা ইভার উপস্থাপনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী বেবী নাজনীন, রিজিয়া পারভীন, রবি চৌধুরী, প্রতীক হাসান, বিন্দু কনা, প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী নাভিন, কৃষ্ণা তিথি, রায়ান তাজ, প্রমি তাজ, শামীম সিদ্দিকী, ত্রিনিয়া হাসান, হীরা এবং মীম প্রমুখ।
মেলা উপলক্ষে গোলাম ফারুক শাহীনের সম্পাদনায় প্রকাশ করা হয় ‘হৃদয়ে লংআইল্যান্ড’ নামে একটি ম্যাগাজিন। মেলার আয়োজনে ছিল লং আইল্যান্ড বাংলাদেশ সোসাইটি।
মেলায় উপস্থাপন করা হয় বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের সংস্কৃতি, কৃষ্টি-কালচারকে। পুরো আয়োজনেই ছিল বাংলা সংস্কৃতির জয়গান। এই মেলায় সব বয়সী বাংলাদেশি বাঙালিয়ানায় অংশগ্রহণ করেন। ছিল স্টল, ছিল গান-বাজনা, ছিল আলোচনা, ছিল নাচ, ছিল প্রবাসে জন্ম নেওয়া এবং বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ। তাদের অংশগ্রহণে পুরো এলাকা যেন একখ- বাংলাদেশে রূপ নেয়। নতুন প্রজন্মের জন্য ছিল খেলাধুলার বিশেষ আয়োজন। মেলায় সফল করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখায় গিয়াস আহমেদ, গোলাম ফারুক শাহীন, রিয়াজ মাহমুদসহ সংশ্লিষ্টদের প্রশংসা করা হয়।