রংপুরের গঙ্গাচড়ার কচুয়া এলাকায় তিস্তা নদীতে গোসলে নেমে দুই শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছেন। ফায়ার সার্ভিসের সাতজন কর্মীসহ রংপুর থেকে ডুবুরি দলের সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছেন।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টা পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার নোহালী ইউনিয়নের কচুয়া বাজার-সংলগ্ন তিস্তা নদীতে নিখোঁজ হন তারা।
নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থী হলেন মুন্না মিয়া (১৮) ও নাইস আহমেদ (১৯)। মুন্না নোহালী ইউনিয়নের পূর্ব কচুয়া আবাসনপাড়া এলাকার হাসেম আলীর ছেলে ও নাইস নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের গনেশের বাজার এলাকার মোনাব্বর হোসেনের ছেলে। তারা দুজনই এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন।
ঘটনার সতত্যা নিশ্চিত করেছেন গঙ্গাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুলাল মিয়া।
প্রত্যক্ষদর্শী এমদাদুল হক জানান, আজ বেলা ১২টায় তুলসীরহাট এলাকা থেকে ছয় কিশোর কচুয়া বাজারের পাশে তিস্তা নদীতে গোসলে নামে। কিছুদূর এগোতেই মাঝ নদীতে ডুবে যায় তারা। এ সময় খেয়াঘাটে বসে থাকা ১৫ থেকে ২০ জন ব্যক্তির মধ্যে এমদাদুলও ছিলেন।
তিনি আরো বর্ণনা করেন, কিশোররা হাবুডুবু খাওয়ার সময় চিৎকার না করলেও পাড়ে থাকা লোকজন বুঝতে পারেন তারা সাঁতার জানেন না। তাৎক্ষণিকভাবে ঘাটের দুটি নৌকা দিয়ে ঘাটে বসে থাকা তিনিসহ অন্যরা উদ্ধার তৎপরতা চালান। ততক্ষণে মুন্না এবং নাইস তলিয়ে যায়। বাকি চারজনকে উদ্ধার করে ঘাটে আনেন স্থানীয়রা। খবর দেয়া হয় ফায়ার সার্ভিসকে।
বেলা দেড়টার দিকে ফায়ার সার্ভিস আসে ঘটনাস্থলে। আধাঘণ্টা পর আসে ডুবুরি দল। তারা ঘটনাস্থলের ৩০০ গজ পূর্ব দিকে উদ্ধার তৎপরতা চালান। বিকেল পৌনে ৬টায় এ খবর লেখার সময় পর্যন্ত নিখোঁজ দুই কলেজ শিক্ষার্থীর কোনো সন্ধান মেলেনি।
ফায়ার সার্ভিস রংপুর অফিসের ডুবুরি দলের প্রধান কামরুজ্জামান সেলিম জানান, বেলা ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত আমরা অভিযান চালাই। পরে প্রচণ্ড বাতাসের কারণে আধাঘণ্টা উদ্ধার অভিযান বন্ধ থাকে। সন্ধ্যা ৬টায় আবারো উদ্ধার অভিযান শুরু হয়।
তিনি বলেন, তিস্তায় প্রচণ্ড স্রোতের কারণে উদ্ধার অভিযান ধীরে পরিচালিত হচ্ছে। সন্ধান না মেলা পর্যন্ত আমরা উদ্ধার অভিযান চালাবো।
গংগাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেছেন, ওই দুই কলেজছাত্র উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।10 স্থানীয়রা জানিয়েছেন, একই স্থানে এর আগে দুই শিশু মারা গিয়েছিলেন একইভাবে।
বুধবার যে ছয় কিশোর গোসলে নেমেছিলেন তারা কেউই আশেপাশের ছিলেন না। তুলসিরহাট এলাকা থেকে ভ্যানযোগে নদীতে গোসল করতে এসেছিলেন তারা।
স্থানীয় হাসেম নামের একজন শিক্ষক জানান, আরো ডুবরি দল বাড়ানো দরকার। পাশাপাশি বেরিবাধ সংলগ্ন নদীর গভীর এলাকাগুলোতেও খোঁজ করা দরকার বলে মনে করেন তিনি।