শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫২ অপরাহ্ন

ইসলামই মানবতার একমাত্র গ্যারান্টি

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ৫৫ বার

মৌলিক অধিকার, মৌলিক মানবাধিকার ও মানুষের জন্মগত অধিকার এ পরিভাষাগুলো মানবাধিকারের বেলায় প্রযোজ্য। এ অধিকার কোনো ব্যক্তি নাগরিক হিসেবে নয়; বরং বিশ্ব মানবগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে লাভ করে থাকে, এগুলো বর্ণ, গোত্র, এলাকা, ভাষা ও অন্যান্য সব প্রকারের স্বাতন্ত্রের ঊর্ধ্বে এবং মানুষের শুধু মানুষ হওয়ার কারণে তা লাভ করে।

জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদ ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকারের ৩০ দফা মহাসনদ ঘোষণা করেছিল। তার মূল কথাগুলো হলো- স্বাধীনতার অধিকার, সাম্য ও সমতার অধিকার, মালিকানার অধিকার ও ন্যায়বিচারের অধিকার।
বিশ^ মানবাধিকার কমিশন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ১৯৭৫-৭৬ সালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে : সম্মিলিত জাতিসঙ্ঘের ১৪২টি দেশের মধ্যে ১১৩টি দেশে মৌলিক অধিকার চরমভাবে পদদলিত হয়েছে এবং শক্তির অপব্যবহার, অবৈধ ধরপাকড়, রাজনৈতিক আটক, নির্যাতন-নিষ্পেষণ, মৃত্যুদণ্ডের ঘটনা, প্রচার মাধ্যমের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ, বিচার বিভাগের ক্ষমতা হ্রাস, স্বৈরাচারী আইন জারি এবং মৌলিক অধিকারগুলো বাতিল বা স্থগিত করার পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দুঃখজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রকৃতপক্ষে যুগে যুগে এবং বর্তমান সময় ও বিশে^র অবস্থা একই।

ইসলামে মানবাধিকার : ইসলামে মানবাধিকারের ১৪ দফা ম্যাগনাকার্টা, যা সূরা বনি ইসরাইলে আল্লাহ পাক ঘোষণা দিয়েছেন। তার মূলকথা হলো : ১. মানুষ স্বাধীন সত্তা। সে আল্লাহ ছাড়া আর কারো গোলাম নয়। ২. বৃদ্ধ পিতা-মাতার সাথে সর্বোত্তম ব্যবহার করতে হবে। ৩. অভাবগ্রস্ত, আত্মীয়স্বজন, মিসকিনদের হক যথাযথ আদায় করা। ৪. অন্যায়ভাবে সব ধরনের হত্যা নিষিদ্ধ। ৫. সন্দেহেবশত কারো ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না।

উপযুক্ত প্রমাণাদি ও সাক্ষ্যের মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আল্লাহ পাক মানবগোষ্ঠীকে জন্মগতভাবে সমান মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছেন- ‘হে মানব জাতি, আমরা তোমাদের সবাইকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি। পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন গোত্রে ও বংশে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পারো। আর তোমাদের মধ্যে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে অধিক মুত্তাকি’ (সূরা হুজুরাত-১৩)। ‘আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ ও আত্মীয়-স্বজনদের দানের নির্দেশ দিচ্ছেন এবং তিনি নিষিদ্ধ করেছেন অশ্লীলতা, অসৎকার্য ও সীমালঙ্ঘন’ (সূরা নাহল-৯০)। ‘কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ তোমাদের যেন সুবিচার বর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা সুবিচার করবে। এ তো তাকওয়ার নিকটতর’ (সূরা মায়িদা-৮)।

বিদায় হজের ভাষণে মহানবী সা: মানবতার ঘোষণাপত্র দিয়ে গেছেন : আরবের ওপর কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই অনারবদের, অনারবদের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই আরবদের ওপর, কৃষ্ণাঙ্গদের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই শ্বেত বা লাল রঙের ওপর, শ্বেতাঙ্গ বা লাল রঙদের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর। তোমরা সবাই আদমের বংশধর আর আদম সৃষ্টি হয়েছে মাটি থেকে।
হে মানব সমাজ! তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-সম্পদ তোমাদের জন্য পবিত্র যতক্ষণ না কিয়ামত দিবসে তোমরা আল্লাহর সামনে হাজির হবে।

হে ভ্রাতৃমণ্ডলী! তোমাদের প্রতি, তোমাদের স্ত্রীদের যেরূপ অধিকার রয়েছে সেরূপ তাদের প্রতিও তোমাদের কতকগুলো অধিকার রয়েছে।… নারীদের সম্পর্কে তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, তাদের সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করো। বস্তুত ইসলাম মাহমুদ-আয়াজকে এক কাতারে শামিল করেছে। বিলালকে দিয়েছে সুমহান মর্যাদা। জায়েদ-ওসামাকে দিয়েছে সেনাপতির মর্যাদা।

খ্রিষ্টান-ইহুদিরা যখন আল-আকসা দখল করে। তখন মুসলমানদের রক্তের নদী বইয়ে দিয়েছিল। ইজ্জত হরণ করেছিল মুসলিম মা-বোনদের। কিন্তু সালাউদ্দিন আইয়ুবি আল-আকসা দখল করলে সেখানে ঝরেনি ইহুদি খ্রিষ্টানদের এক ফোঁটা রক্ত। লুণ্ঠিত হয়নি কোনো নারীর ইজ্জত-আব্রু। এটিই ইসলামের সুমহান মানবতা! তাই ইসলামই একমাত্র মানবতার গ্যারান্টি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com