বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে তার মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানো হয়েছে। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে খালেদা জিয়াকে আগের মতোই দুটি শর্ত মানার কথা বলা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্মসচিব (কারা অনুবিভাগ) মো. জিয়াউল হক।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, খালেদা জিয়া ঢাকার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন এবং এই সময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না- এ দুটি শর্তে দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে অষ্টমবারের মতো কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ল। সপ্তম দফায় বাড়ানো তার মুক্তির মেয়াদ আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হবে।
এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর বিষয়ে মত দিয়ে এ সংক্রান্ত ফাইল আইন মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওইদিন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছিলেন। তারও আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। অসুস্থতা বাড়লে তিনি হাপাতালে ভর্তি হন। এখনো তিনি রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে গতকাল রবিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে তাকে কেবিন থেকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।
খালেদা জিয়া দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দী ছিলেন। পরে নির্বাহী আদেশে তার দণ্ড স্থগিত করা হয়েছে, যার মেয়াদ দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী রাখা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর এই মামলায় আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।
ওই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন একই আদালত। রায়ে খালেদা জিয়াকে সাত বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। ২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে কারাবন্দী খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয় সরকার।