প্রত্যেক জিনিসের একটি সৌন্দর্য আছে। যেমন- জামা-কাপড় বানালে কাটিং ও সেলাই সুন্দর না হলে জামা দেখতে ভালো দেখায় না, পরতেও আরাম লাগে না। জুতা পরিধান করলেও আমরা সুন্দরটিই বেছে নিই। সবাই আমরা সুন্দরের পাগল! মহান আল্লাহ তায়ালা নিজেই সৌন্দর্য ভালোবাসেন। তেমনি মাথার চুলগুলোও কত সুন্দর দেখতে। চুলে তেল, শ্যাম্পু, সুগন্ধি ব্যবহার করি। ভালো ও মসৃণ রাখার জন্য।
সেই চুল রাখারও কিন্তু সুন্নত পদ্ধতি রয়েছে। এলোমেলো মনগড়া ইহুদিদের স্মরণ করে চুলের কাটিং করলে মহান রব নারাজ হয়ে যান।
প্রত্যেক কাজই আল্লাহকে রাজিখুশি করে করা আমাদের কর্তব্য।
চুল রাখারা সুন্নত পদ্ধতি-
জীবন চলার পদ্ধতি কুরআন-হাদিসে সবই বলা আছে। পুরুষদের জন্য বাবরি চুল রাখা সুন্নত। কেননা, রাসূলুল্লাহ সা:-এর সাধারণ অভ্যাস ছিল বাবরি চুল রাখা। তা তিন পদ্ধতিতে হতে পারে। ১. উভয় কাঁধ বরাবর; ২. ঘাড়ের মাঝামাঝি; ৩. উভয় কানের লতি পর্যন্ত (সুনানে আবু দাউদ : ৪১৮৩-৪১৮৭)।
রাসূলুুল্লাহ সা: ইহরাম থেকে হালাল হওয়ার জন্য মাথা মুণ্ডাতেন। এ ছাড়া তিনি কখনো মাথা মুণ্ডাননি। এ সময় তিনি মাথা মুণ্ডানোকে চুল ছোট করে রাখার উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। এ জন্য ইমাম তাহাবি রহ: বলেন, মাথা ন্যাড়া করাও সুন্নত । আর কিছু অংশ মুণ্ডানো ও কিছু রেখে দেয়া নিষেধ। মুণ্ডাতে ইচ্ছে না করলে চুল ছোট রাখা যেতে পারে।
আলেমরা তিন তরিকায় বাবরি রাখাকে সুন্নত আর মাথার চুল ছোট করে রাখা বা মুণ্ডানোকে জায়েজ বলেন। এ ছাড়া সামনে বা পেছনে লম্বা রাখা অথবা ডান পাশে বা বাম পাশে ছোট-বড় করে রাখাকে জায়েজ মনে করেন না। এ ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয় হলো- চুলের যে কাটিং ভিন্ন কোনো জাতিসত্তার অনুকরণে হবে, তাই নাজায়েজের মধ্যে শামিল হবে (মাহমুদিয়া-২৭/৪৬০, মিশকাত-৩৮১, ২৩২, ৩৮০)।
মেয়েদের জন্য চুল মুণ্ডন করা বা কেটে ছেলেদের মতো করে ফেলা নিষেধ। আবার এত বড় রাখা উচিত নয় যে, গোছলের সময় পানি পৌঁছানো কষ্টকর হয়; বরং পিঠ বা কোমর পর্যন্ত রাখা ভালো। সে মতে কোমরের নিচের অংশ কেটে ফেলা জায়েজ হবে। অবশ্য না কাটলেও কোনো সমস্যা নেই।
লেখক : সাবেক ইমাম, মসজিদ আল-আনাস রা:, জিজান, সৌদি আরব