ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতি দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারীতার কারণে দেশে ভয়ংকর দুর্ভিক্ষ অবস্থা বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।এ সময় দেশে এখন নৌকা মার্কা আইন চলছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বেগম খালেদা জিয়াকে পৃথিবী থেকে সরাতে চান শেখ হাসিনা এমন অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা কারাবন্দী থাকাকালীন যখন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য গিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের নেতা নাসিম সাহেব বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন, মোফাজ্জল হোসেন মায়া, হাজী সেলিম গেছেন বিদেশে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া যেতে পারেন না। আইনমন্ত্রী আইন দেখান। এই আইন তো নৌকা মার্কা আইন। দেশে তো এখন নৌকা মার্কা আইন চলছে, এটা জনগণের আইন না। এই আইন হচ্ছে বাকশালি আইন।’
তিনি বলেন, ‘দেশের প্রচলিত আইনে মঈনুদ্দিন, ফখরুদ্দিনের সময় শেখ হাসিনা গেছেন না বিদেশে চিকিৎসার জন্য? আর বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আইন লাগে। কারণ, উদ্দেশ্য একটাই বেগম খালেদা জিয়াকে পৃথিবী থেকে সরাতে চান শেখ হাসিনা।’
বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অবনতিশীল জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি গতকাল তাকে দেখতে গিয়েছিলাম, যার অদম্য সাহস আমাদেরকে তরুণ বয়সে ছাত্র জীবনে প্রেরণা দিয়েছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে যার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তাকে আজকে রাষ্ট্রীয় কষাঘাতে কোনো চিকিৎসা না দিয়ে তিলে তিলে নিঃশেষ করার জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ’
‘বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসা দরকার। তার চিকিৎসকরা দাবি করছে, কিন্তু এই সরকারের কানের মধ্যে পাথর ঢুকে গেছে। সরকার চিকিৎসকদের দাবি জনগণের দাবি শুনতে পায় না। কারণ, তাদের একটি অশুভ উদ্দেশ্য আছে কীভাবে বেগম জিয়াকে নিঃশেষ করা যায়’, যোগ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আজকে সারাদেশে ভয়ংকর দুর্ভিক্ষ অবস্থা বিরাজ করছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, সারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করেছে কেন? প্রধানমন্ত্রী বলছেন, আন্তর্জাতিক চাপ আছে। কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গণতন্ত্রকামী দেশ বলে তখন তিনি বলেন, বাইরের চাপের কাছে মাথা নত করব না।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষ খেতে পারছে না, মধ্যবিত্তরা যারা কারও কাছে কিছু চাইতে পারে না, তারা নিরবে কান্না করছে। তাদের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।এই সরকার সিন্ডিকেট বান্ধব। চিনির কেজি ১৩৫ টাকা সরকার নির্ধারণ করেছে, বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা থেকে ১৫০ টাকা। সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। যারা এই বাজার নিয়ে ফটকাবাজি করে তারা তো আওয়ামী লীগের লোক। যারা সিন্ডিকেট করছে তারা আওয়ামী লীগের লোক। সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা যায় না বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, তারপরও তিনি বহাল তবিয়তে মন্ত্রী আছেন। ’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষকে ক্ষুধায় রেখে, মানুষকে অনাহারে রেখে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধি করে সরকারপ্রধান ১৬৭ জনকে নিয়ে আমেরিকা সফর গেছেন। অথচ দেশের মানুষ খাবার কিনতে পারে না, অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে।’
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে লিফলেট বিতরণকালে আরও ছিলেন- বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক কর্ণেল (অব.) জয়নুল আবেদিন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনােয়ার প্রমুখ।