রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০১ অপরাহ্ন

নিউইয়র্কে শিশুদের টিকটক ব্যবহার বন্ধে আইন হচ্ছে

এনবিডি নিউজ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৫৯ বার

নিউইয়র্কের শিশুদের টিকটক, ইনস্টাগ্রাম এবং অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম সাইটের ‘আসক্তিজনক’ ফিচার থেকে দূরে রাখতে আইন প্রণয়নের কথা ভাবছেন গভর্নর ক্যাথি হোকুল এবং রাজ্যের আইনপ্রণেতারা।

গভর্নর হোকুল ঘোষণা করেন, শিশুরা যাতে সামাজিক মিডিয়া সাইটগুলোর টার্গেট করা অ্যালগোরিদম থেকে দূরে রাখা যায়, সেজন্যই নতুন আইন করা হচ্ছে। এসব সাইট চরম এবং অনেক সময় সহিংস কন্টেন্ট অবাধে প্রকাশ করে ব্যবহারকারীদের সম্ভব বেশি সময় সম্পৃক্ত রাখে।

নতুন আইনে বলা হয়েছে যে অ্যালগোরিদমে নিয়ন্ত্রিত টিকটক, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবের মতো অ্যাপসগুলোর কোনো কোনোটি ব্যবহার করতে শিশুদের তাদের মা-বাবার অনুমতি লাগবে। এই বিধিনিষেধ কার্যকর করার দায়িত্ব পালন করবে টেক কোম্পানিগুলোই। আর অ্যাটর্নি জেনারেল এই নিয়ম লঙ্ঘনকারীদের জরিমানা করবে, আইন পালন করতে যা যা করা দরকার, সবই করবে।

গভর্নর হোকুল বলেন, ‘এসব শিশুকে আসক্ত করতে সামাজিক মিডিয়া এবং অ্যালগোরিদম বিরামহীনভাবে যেসব জিনিস দিচ্ছে, তা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।’

তিনি বলেন, ‘তারা এজন্য অনুমতি চায় না।’

তিনি বিভিন্ন সমীক্ষার কথা উল্লেখ করে বলেন যে ‘এগুলো অনুমতি চায় না।’ অথচ অতিরিক্ত ব্যবহার করা হলে এগুলো শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে।

গভর্নর বলেন, ‘এটি প্রাণঘাতী সরঞ্জাম হতে পারে। এটি কোনো অতিরঞ্জিত কথা নয়।’

উপস্থিত নেতারা বলেন, তারা মনে করেন যে এই আইনের ফলে সামাজিক অ্যাপসগুলো নিয়ন্ত্রিত হবে।

অ্যাটর্নি জেনারেল জেমস বলেন, ‘সামাজিক মিডিয়া কোম্পানিগুলো ব্যবহারকারীর বয়স নির্ধারণ করতে নানা পদ্ধতি ব্যবহার করে। তারা ব্যবহারকারীর ব্রাউজার শনাক্ত করতে পারে। আমরা তাদের বলছি যে এই অ্যালগোরিদম শিশুদের ওপর ব্যবহার না করতে।’

তবে সার্ভেইল্যান্স টেকনোলজি ওভারসাইট প্রজেক্ট (এসটিওপি) নামের একটি নজরদারি অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ ভিন্ন মত প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, বয়স যাচাই প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা কোম্পানিগুলোকে দেওয়া হলে তারা আমাদের সবাইকে অনুসরণ করার আরো ক্ষমতা পেয়ে যাবে। আর শিশুরা সম্ভাব্য সুরক্ষা নানাভাবে পেয়ে যাবে।

এসটিওপির নির্বাহী পরিচালক আলবার্ট ফক্স কান বলেন, বিধিনিষেধ এড়িয়ে যাওয়ার নানা টুলস ইতোমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে। শিশুরা সেগুলো ব্যবহার করতে পারে। অন্যদিকে আমাদের পরিচিতি শনাক্ত করতে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত ভয়াবহ সব উপায় অবলম্বন করছে।

প্রস্তাবিত আইনে ১৮ বছর বয়সের নিচের শিশুদের সামাজিক মিডিয়ার অ্যাপসগুলোতে প্রবেশ করতে তাদের মা-বাবার অনুমতি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া শিশুরা যাতে মধ্য রাত থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সামাজিক মাধ্যমে থাকতে না পারে, সেজন্যও পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।

শিশুরা দিনে মোট কত ঘণ্টা অ্যাপস ব্যবহার করছে, সেটাও তার মা-বাবা জানতে পারবে।

এসব বিধিনিষেধ অমান্যকারী কোম্পানিকে প্রথবার পাঁচ হাজার ডলার করে জরিমানা করতে পারবেন অ্যাটর্নি জেনারেল। আর শিশু ও তার অভিভাবকেরা নিয়ম লঙ্ঘনকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতিবারের জন্য পাঁচ হাজার ডলার দাবি করে মামলা দায়ের করতে পারবেন।

রাজনীতিবিদরা বলেন, কিশোরীদের ওপর পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে সামাজিক মিডিয়ায় মাত্রাতিরিক্ত সময় ব্যয় করাটা মদ্যপান, যৌন আক্রমণ, স্থ’ূলতা এবং ড্রাগ ব্যবহারের চেয়েও খারাপ প্রভাব সৃষ্টি করে।

কয়েকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ক্রমবর্ধমান হারে সামাজিক মিডিয়ায় থাকার ফলে শিশুদের মধ্যে বিষণœতা, উদ্বেগ, আত্মহত্যার চিন্তা, কম ঘুম এবং নিজের ক্ষতি করার মতো প্রবণতা সৃষ্টি হয়।

এদিকে টিকটক বলেছে, তারা সমাজের, বিশেষ করে শিশুদের সুরক্ষিত ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে সহায়তা করে যাবে।

আরেক সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক (মেটা) জানিয়েছে, তারা শিশুদের সুরক্ষার বিষয়টির ওপর নজর দেবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com