বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এখন আওয়ামী লীগ একটা নতুন সুর তুলেছে, বিএনপি সন্ত্রাসী দল, বিএনপি সন্ত্রাসী দল হলে আওয়ামী লীগ কি? আপনারা সন্ত্রাসের বাবা।’
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
‘কৃষি উপকরণ খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি : সরকারের অব্যবস্থাপনা – কৃষক ও জনগণের নাভিশ্বাস’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে সোনালী দল, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ময়মনসিংহ।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশে খাদ্যদ্রব্য মূল্যবৃদ্ধি একটি নজিরবিহীন, বিশ্বের সব দেশেই দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়েছে তবে এ দেশে বেড়েছে অবিশ্বাস্য নজিরবিহীনভাবে। এর মূল কারণ একটি জবাবদিহিহীন সরকার। যাকে কোথাও কোনো জবাবদিহি করতে হয় না। যা ইচ্ছে তাই করছে। তাদের ব্যর্থ পরিচালনা, দুর্নীতি, দুঃশাসন আজ এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছে যে মানুষের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে এখন মৃত্যুবরণ করার মতো একটা অবস্থায় গেছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে তো প্রজেক্ট অনেক করা হয়, কিন্তু সেই প্রজেক্টের মূল লক্ষ্য হলো চুরি করা। এমন চুরি যেটা এক লাখ টাকায় হবে সেটা তিন লাখ টাকা, যেটা ১০ কোটি টাকায় হবে সেটা ৩০ কোটি টাকা, ওই প্রজেক্টের সাথে যারা জড়িত থাকেন তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়, এটাই বাস্তব কথা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন আওয়ামী লীগ একটা নতুন সুর তুলেছে- বিএনপি সন্ত্রাসী দল। কিন্তু বিএনপি যদি সন্ত্রাসী দল হয়, তাহলে আওয়ামী লীগ কী? আপনারা সন্ত্রাসের বাবা। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই রাষ্ট্রকে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলেছে।’
তিনি বলেন, ‘এ সরকার অনির্বাচিত সরকার, তারা ১৫ বছর দেশটাকে একটা লুটের রাজত্ব করেছে। কী পরিমাণ লুট করেছে তা বর্ণনা দিয়ে শেষ করা যাবে না। এর পরিণাম আজ বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হচ্ছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখন সামনে আর কোনো বিকল্প নেই, একটাই মাত্র কাজ- এই সরকারকে সরাতে হবে।’
সরকারি কর্মকর্তাদের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন কোনো সরকারি কর্মকর্তা কিন্তু অসুখী নয়, কারণ তারা কোনো না কোনো প্রজেক্টের সাথে জড়িত আছেন। জড়িতদের প্রচুর পয়সা আছে। দেশের মানুষ ডিম কিনতে পারছে না, কিন্তু ইলেকশনে ঘুষ দেয়ার জন্যে ডিসি-ইউএনওদেরকে গাড়ি কিনে দেয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি, লুটপাট করে এরা একটা মগের মুল্লুক তৈরি করেছে, সেখান থেকে এরা আর বের হতে চায় না।’
‘আমার খাওয়ার তো অধিকার আছে, বেঁচে থাকার তো অধিকার আছে? এখন দেখি বিচার পাওয়ার অধিকারও আমার নাই,’ বলেন তিনি।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কয়েকটা দিন আছে; মাসও নেই। আসুন আমরা বুকে সাহস নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ি। আরে মারবে তো মারবেই, ১৫ বছরে আমাদের হাজার লোককে মেরে ফেলেছে। গুম, মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে আসতে রাজপথে নেমে আসতে হবে। আন্দোলন করতে হবে।’
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মানে মানে ক্ষমতা ছাড়ুন, দেশের মানুষকে বাঁচতে দেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে কেটে পড়ুন।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, আব্দুস সালাম, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জারিফ তুহিন, ড. আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।