লালমনিরহাটের মহেন্দ্রনগরে বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবকলীগের ওয়ার্ড সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এই ঘটনায় গুরুতর আহত অপর স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা রাজু মিয়াকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার হরতাল চলাকালে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর এলাকায় বিএনপির মিছিলের সময় সাইট টোন করা নিয়ে সংঘর্ষ বাধে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে। এ সময় সংঘর্ষে গুরতর আহত হন জাহাঙ্গীরসহ পাঁচজন। তাদেরকে চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যালে আনা হলে দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অপর আহত দু’জনের মধ্যে একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. ইউনুস আলী জানান, রোববার বেলা পৌনে ১টায় (২৯ অক্টোবর) জাহাঙ্গীর হোসেনকে (৫০) রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতোলের সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যু হয়েছে জাহাঙ্গীরের। লাশ ওয়ার্ড থেকে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক আরো জানান, ওই ঘটনায় আহত রাজু মিয়া (৪০) ১৫ নম্বর সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বিকেলে সাড়ে ৪টায় স্বজনরা তাকে নিয়ে সড়কপথে ঢাকায় রওনা হয়েছেন।
নিহতের ছোট ভাই রাশেদ হোসেন জানান, হরতালে বিএনপির লোকজন মিছিল দিচ্ছিল। এ সময় গ্যানজাম শুরু হয়। বিএনপির লোকজন বাজারের অফিস ঘেরাও করে আমার ভাই জাহাঙ্গীরকে কোপানো শুরু করে। দুই পা, হাত, মাথা ও কোমড়ে চোটায়। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। কারাকারা মেরেছে তাদেরও আমি চিহ্নিত করেছি। মিডিয়াকে নয়, আইনের লোকের কাছে সেটা বলবো আমি।
রাশেদ আরো জানান, জাহাঙ্গীর লালমনিরহাট সদর উপজেলা গোকুন্ডা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং স্থানীয় বাফার গোডাউনের লোড আন লোড ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি ওই এলাকার আজিজার রহমানের ছেলে। চারভাই দু্ই বোনের সবার বড় জাহাঙ্গীর।
হাসপাতালে উপস্থিত রাজনৈদিক সহকর্মী জানান, মহেন্দ্রনগরে বিএনপির হরতাল আর আমাদের শান্তি সমাবেশ ছিল। ওই কারণে ৯টা থেকে আমরা সেখানে অবস্থান নেই। সেখানে প্রশাসনের লোকজনও ছিল। আমরাও মিছিল দেই। বিএনপিও মিছিল দেয়। পরে হাটঘর এলাকায় ফিরে আসলে সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে ওরা বিএনপির লোকজন চতুর্দিক থেকে ঘিরে আমাদের হামলা করে। এতে জাহাঙ্গীর বাবলু, ও রাজুসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। আমরা তাদেরকে প্রথমে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে রংপুর মেডিক্যালে রেফার্ড করলে এখানে ভর্তি হওয়ার পর জাহাঙ্গীর মারা যায়।
হাসপাতালে উপস্থিত রংপুর জেলা ছাত্রলেীগ সভাপতি সাব্বির আহমদ জানান, মহেন্দ্রনগরে আমাদের স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে বিএনপির লোকেরা। জড়িতদের বিচার চাই। পাশাপাশি রাজপথে থেকে এর সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করতে চাই।