দেশব্যাপী টানা ৭২ ঘণ্টা রাজপথ, রেলপথ ও নৌ-পথ অবরোধের দ্বিতীয় দিনে বগুড়ায় বিএনপির মিছিলে পুলিশের গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ, বিজিবির সাথে জামায়াত কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ট্রাকে অগ্নিসংযোগ, কাভার্ডভ্যান ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকালে শহরের পুরান বগুড়া তিনমাথা রেলগেট এলাকায় রাস্তা অবরোধ করলে বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত গুলি চালায় পুলিশ। সকাল পৌনে ১০টার দিকে রাস্তা অবরোধকারীদের লক্ষ্য করে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। সংঘর্ষে বিএনপির পাঁচ থেকে ছয়জন নেতাকর্মী রাবারের গুলিতে আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, সহিদুন্নবী সালামসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সাইদুল ইসলাম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে তিন মাথা রেলগেট এলাকায় অবস্থান করছিলাম। হঠাৎ পুলিশ গুলি, টিয়ারশেল ছোড়ে। এ সময় আমাদের প্রায় পাঁচ থেকে ছয়জন নেতাকর্মী রাবার বুলেটে আহত হয়।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা বলেন, সকাল থেকেই আমাদের নেতাকর্মীরা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয়। কিন্তু পুলিশ বিনা কারণে গুলি, সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
সদরের মাটিডালী বিমানমোড়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশার নেতৃত্বে সকাল সাড়ে ৮টায় অবরোধের সমর্থনে একটি মিছিল বের করলে পুলিশ অতর্কিত গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে চলে যায়। এ সময় রাবার বুলেটে একজন মহিলাদল নেত্রীসহ চার থেকে পাঁচজন আহত হয়েছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শহর বিএনপির সভাপতি হামিদুল হক চৌধুরী হিরু, সদর উপজেলা সভাপতি মাফতুন আহমেদ খান রুবেল, লাভলী রহমান, নাজমা আক্তার, মনিরুজ্জামান মনি, সৈয়দ জহরুল আলম, অ্যাডভোকেট নাজমুল হুদা পপন, মিজানুর রহমান প্রমুখ।
জামায়াতের সাথে বিজিবির ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া : সকাল ৯টার দিকে দ্বিতীয় বাইপাস সড়কের ঘুনিয়াতলায় বিজিবি পাহারায় আটকে থাকা কয়েকটি কোচ পারাপারের সময় উত্তেজনা দেখা দেয়। এ সময় বিজিবির সাথে জামায়াত কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। প্রায় ২০ মিনিট ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর জামায়াত কর্মীরা মহাসড়ক থেকে সরে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এছাড়া শহরের তিনমাথা, চারমাথা এবং বারোপুর এলাকায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে পিকেটিং করে।
জামায়াতে ইসলামী বগুড়া শহর শাখার আমির অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান জানান, জামায়াত নেতাকর্মীরা শহরের চারটি পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। ঘুনিয়াতলায় কিছুটা উত্তেজনা এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে বগুড়া-রংপুর মহাসড়কের সদরের নওদাপাড়ায় দূর্বৃত্তরা তিনটি কাভার্ডভ্যান ও বগুড়া-নওগা মহাসড়ের চারমাথায় একটি মাইক্রোবাস ভাংচুর, দুপুরে গোকূলে একটি মালবাহী ট্রাকে অগ্নিসংযোগ করেছে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, রাস্তায় অপ্রিতিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে দিবো না।
এদিকে জেলা আ’লীগ সদরের মাটিডালী মোড়ে এবং বনানীতে পৃথক দু’টি অবরোধ বিরোধী সমাবেশ করেছে।
এগুলোতে জেলা সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, সদর সভাপতি আবু সুফিয়ান সফিক বক্তব্য দেন।