বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান আইনজীবীকে ‘কুপিয়ে হত্যা করল’ ইসকন সদস্যরা অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা অহিংস গণঅভ্যুত্থানের আহ্বায়কসহ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ চিন্ময়কে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে ভারতের বিবৃতি মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

নির্বাচনের নামে তামাশা পুরোদমে চলছে : রিজভী

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ৫১ বার

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নির্বাচনের নামে তামাশা পুরোদমে চলছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা শুনে ক্ষিপ্ত সরকার প্রধান। যারা সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের কথা বলে তাদের তিনি ব্যাক্তিগত দুশমন বিবেচনা করেন। আর সেজন্য বিরোধী দলের অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবির আন্দোলন দমাতে নানা পন্থা অবলম্বন করেছেন, যেগুলো নির্মম পৈশাচিক।

বুধবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালি এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, আন্দোলনরত নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের পর রিমান্ড, জার্মানির ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের’ অতাচারের কাহিনীকেও হার মানাবে। দল পরিবর্তনের জন্য কারান্তরীণ গণতন্ত্রকামী রাজনীতিবিদদের চরম অসম্মানজনকভাবে তাদের সম্মতি আদায়ের জন্য জুলুম করা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। রিমান্ডে নির্যাতন করে তরুণ নেতাকর্মীদের মিথ্যা স্বাক্ষ্য আদায়ের চেষ্টা চলছে। বিএনপি’র নেতাকর্মীদের নিপীড়ন, নির্যাতন, হেনস্তা ও হেয় করেও এদের পরাস্ত করতে না পেরে উৎপীড়নের পথ অবলম্বন করছে। সরকার আইন প্রয়োগকারী র‌্যাব-পুলিশ ব্যাবহার করে রাজনৈতিক দলের নীতি-নৈতিকতা অধ:পতনের দিকে ঠেলে দেয়ার এক সুগভীর নীল নকশা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সরকার প্রধানের তাতে কোনো লাভ হবে না। বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আদায়ের আন্দোলনে অটুট বন্ধনে আবদ্ধ।

তিনি বলেন, সরকার একটা কার্যকর, শক্তিশালী রাষ্ট্র চায় না। তাদের লক্ষ্য দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা। দেশকে নিজের জমিদারী মনে করা সরকারের মধ্যে একটা মালিকানালিপ্সা, আধিপত্যবোধ, শঠতা ও বল প্রয়োগের প্রবণতা প্রবল। আর এ কারণেই তারা দেশের সার্বভৌমত্ব অন্যের হাতে ক্রমান্বয়ে তুলে দিচ্ছে।

রিজভী বলেন, ভোটারবিহীন গণবিরোধী সরকার বাংলাদেশকে উপসংহারহীন পরিস্থিতির দিকে ধাবিত করছে। সমস্ত অর্থনৈতিক সেক্টর ধ্বংসের পর এবার তাদের কুনজর পড়েছে বৈদেশিক রফতানি আয়ের সবচেয়ে বড় খাত পোশাক শিল্পের দিকে। সরকার অত্যন্ত সুকৌশলে পোশাক শিল্প ধ্বংসের নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে।

তিনি বলেন, ক্রেতাদের মতামত উপেক্ষা করে সরকার সমর্থক সুবিধাবাদী গোষ্ঠী শোষণ নীতির পক্ষে সরকারের অবস্থান, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি দমনে হত্যা নিষ্পেষণ, অপিরণামদর্শী সিদ্ধান্ত এবং প্রতিবেশী দেশের স্বার্থে এই সর্ববৃহৎ শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নেয়া হয়েছে। শ্রম অধিকার সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র নতুন শ্রমনীতি ঘোষণার পর বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রায় অবধারিত বলে আশঙ্কা করছেন মালিকরা। গতকাল পোশাক খাতে আতংকের বিষয়টি মালিকদের সংগঠন বিজেএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের কথাতেই স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘নিষেধাজ্ঞা আসলে বিদেশীরা পণ্য নেবে না। ইতোমধ্যে পণ্যের আদেশ দাতারা এমন শর্ত জুড়ে দিয়েছেন ঋণপত্র খোলার সময়। এমনকি পণ্য জাহাজীকরণের পর নিষেধাজ্ঞা আসলেও পণ্য নেবে না তারা।’ ইতোমধ্যে এ খাত ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ ব্যবসা হারিয়েছে। পোশাক শিল্পের মালিকদের ঘোর অনিশ্চয়তার মধ্যে উদ্ভট পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বালখিল্য প্রদর্শন করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বললেই পোশাক রফতানি বন্ধ হবে না। নিষেধাজ্ঞা দিলে কিছুই হবে না।
শেখ হাসিনা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিলে আমরাও দেবো। এমন পরিস্থিতির মধ্যে লাখ লাখ গরীবের রুটি রুজির একমাত্র কর্মক্ষেত্র গার্মেন্টস শিল্পের ধ্বংস ডেকে আনছে গণবিচ্ছিন্ন নিশিরাতের সরকার। কারণ দেশের মোট পোশাক রফতানির ৮২ শতাংশ যায় ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোয়। এসব দেশে রফতানি বাধাগ্রস্ত হলে এ শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ কমে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। মানুষের হাতে ভিক্ষার ঝুলি তুলে দিতে পারবেন শেখ হাসিনা। জনগণ বিশ্বাস করে রেডিমেড গার্মেন্টস ব্যবসায় এখন অন্য দেশের হাতে তুলে দিয়ে অবৈধ ক্ষমতায় থাকার গ্যারান্টি চায় এই অবৈধ সরকার।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশের লাখ লাখ শ্রমিক এই রফতানি খাত গড়ে তুলেছেন। উদ্যোক্তারা নানান পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে শিল্প গড়ে তুলেছেন। আর এই সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য বাংলাদেশের সমস্ত কলকারখানা, মানুষের পেটে লাথি মারার চিন্তা করছে। বাংলাদেশের বাজারকে হুমকির মধ্যে ফেলছে। সুতরাং আগামী একতরফা নির্বাচন শুধু সরকারের ক্ষমতার নবায়ণ নয়, বাংলাদেশকে ধ্বংস করার লাইসেন্স। এই সরকার এভাবে জনগণের পেটে যে লাথি মারছে তা না, তারা পুরো দেশ নিয়ে বাজি ধরছে। বাংলাদেশের মানুষকে শেখ হাসিনা গং বোকা ভাবেন, বিদেশীদেরকেও তারা বোকা ভাবতে শুরু করেছেন। তারা ভেবেছে- এভাবে সবার চোখে ধুলো দেয়া যাবে। বাংলাদেশের সকল মানুষ জানে, এমনকি যারা আওয়ামী লীগ করে তারাও জানে যে এই সরকার দেশের মানুষের সাথে সর্বোচ্চ প্রতারণা করছে। বাংলাদেশের সকল মানুষকে তাদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য রাজপথে নামতে হবে। আমরা বারবার বলেছি- একতরফা নির্বাচন দেশের রাজনৈতিক সংকটকে আরো ঘনীভূত করবে, বিপর্যস্ত করবে। দেশকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে। এই পাতানো নির্বাচন কেবল বয়কট নয় গণ-প্রতিরোধের মাধ্যমে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে একটা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা নিশ্চিত করতে হবে।

রিজভী বলেন, আমাদের আন্দোলন গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের আন্দোলন, এই শুধু বিএনপির নয় এই আন্দোলন গণতন্ত্রকামী সকল রাজনৈতিক দল ও শ্রেণীপেশার মানুষের। জন আকাঙ্ক্ষার সাথে সম্পৃক্ত এই আন্দোলন। গণতন্ত্র হারা মানুষ আজ লাঞ্ছিত ও বঞ্চিত। মানুষের মনের মঙ্গলকর ও কল্যাণকর প্রবণতাগুলোর বিকাশ ঘটাতে হলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ বির্নিমান অপরিহার্য। গণতন্ত্র হচ্ছে জীবনের বিপুল সম্ভাবনার ইঙ্গিতবাহী। গণতান্ত্রিক চর্চার মধ্য দিয়ে চিন্তা প্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তি ও শৃঙ্খলা এবং মনুষ্যত্বের বিকাশ সাধিত হয়। দেশে মানুষের জীবন, সমাজ, রাষ্ট্র অনেক সুন্দর হতে পারে সর্বজনীন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে।

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com