বাংলাদেশের জন্য দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এ ঋণ চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রতি নজরদারিও বাড়িয়েছে সংস্থাটি। দুর্বলতা মোকাবিলায় সংস্থাটি আর্থিক খাতে সংস্কারের দিকেও মনোনিবেশ করতে পরামর্শ দেয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) ওয়াশিংটন থেকে ভার্চুয়ালি প্রেস ব্রিফিং করেন সংস্থাটি।
ব্রিফিংয়ে আইএমএফের বাংলাদেশ মিশন প্রধান রাহুল আনন্দ বলেন, আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, বেশিরভাগ কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা ও সংস্কারে প্রতিশ্রুতি পূরণ করা হয়েছে। কঠিন সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিবেশ সত্ত্বেও সামগ্রিক কর্মসূচির কর্মক্ষমতা সন্তোষজনক হয়েছে।
এই প্রচেষ্টার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, কোভিডের পর থেকেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ভালো করছে। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর সেই লাগাম ছুটে যায়। এরপর ব্যাংক সুদ হারের সীমা তুলে নেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক এরইমধ্যে সুদ হারের সীমা তুলে নিয়েছে। ফলে নতুন ঋণের ক্ষেত্রে সুদ এখন ১১ শতাংশের বেশি। এই কঠোর অবস্থা কিছুদিন বহাল রাখতে হবে। এটি আমাদের পরামর্শ ছিলো। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, এই চড়া সুদ হারের সময় যেন আবার মূল্যস্ফীতি বেড়ে না যায়। অর্থাৎ মুদ্রানীতি আরও সঙ্কোচন করতে হবে বলে জানান রাহুল আনন্দ।
এ সময় বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে যেতে কয়েকটি ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এগুলো হলো- কর রাজস্ব বৃদ্ধি ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো ও এক্সচেঞ্জ রেট পদ্ধতি বদলাতে হবে, যেন বিশ্ববাজারে দর ওঠানামা করলে খুব বেশি সমন্বয় করতে না হয়। টাকার মান কমায় সরকারের বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি বেড়েছে। তাই বিষয়টি নতুন করে ভাবার তাগিদ সংস্থাটির।
একইসঙ্গে নীতি প্রণয়নের প্রক্রিয়া বদলানো, ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রণ, তদারকি ও সুশাসন জোরদারের মাধ্যমে আর্থিক খাতের দুর্বলতা মোকাবিলায় সংস্কারের দিকেও মনোনিবেশ করা উচিত বলে জানান রাহুল আনন্দ।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। ২০২৬ সালের মধ্যে সাত কিস্তিতে এই ঋণ মিলবে। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার বুঝে পায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় কিস্তিতে পাচ্ছে ৬৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আর ৩য় কিস্তি ছাড়ের আগে মার্চে আবারও বাংলাদেশে আসবে আইএমএফ প্রতিনিধি দল।