মহামারিতে গণহারে মানুষ মারা গেলে লাশ পুড়িয়ে ফেলার চেয়ে কবর দেওয়া উত্তম বলে মত দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে মৃতদেহ সৎকারের ক্ষেত্রে ধর্ম ও সামাজিক রীতিনীতি মান্য করারও আহ্বান জানানো হয়েছে। সংস্থাটির নিজস্ব ওয়েবসাইটে ‘রিস্কস পোজড বাই ডেড বডিস আফটার ডিজাস্টারস’ শিরোনামে প্রকাশিত নির্দেশনায় এমনটা বলা হয়েছে।
এই নির্দেশনায় আরও বলা হয়, সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে করোনাভাইরাসে মৃত ব্যক্তি থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। তবে এর কোনো প্রমাণ মেলেনি। এমনকি প্রাকৃতিক কোনো বিপর্যয়ের পর কোনো লাশের শরীর মহামারি রোগ সৃষ্টি করে এমন কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি। কারণ মহামারিতে মারা যাওয়ার পর মানুষের শরীরে ওই এজেন্টের বেশিরভাগই দীর্ঘ সময় জীবিত থাকে না। তবে লাশের সঙ্গে সংস্পর্শ অব্যাহত রাখলে যক্ষ্মা বা রক্তবাহিত ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটতে পারে। লাশ থেকে এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যগত কিছু ঝুঁকি থাকে। যেমন কেউ যদি কলেরা বা রক্তপ্রদাহজনিত জ্বরে (হেমোরেজিক ফিভার) মারা যান, তাহলে এটা ঘটতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আরও জানিয়েছে, যেসব মানুষ নিয়মিত মৃতদেহ দাফন বা এর দাফন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকেন তাদের যক্ষ্মা, রক্তবাহিত ভাইরাস (যেমন হেপাটাইটিস-বি, সি এবং এইচআইভি) এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল (যেমন কলেরা, ই-কোলি, হেপাটাইটিস-এ, রোটাভাইরাস ডায়রিয়া, সালমানেলোসিস, শিগেলোসিস এবং টাইফয়েড/প্যারাটাইফয়েড জ্বরে) সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে।
এ ক্ষেত্রে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাতে বলা হয়েছে, যখন গণহারে মানুষ মারা যায় এবং মৃতদের আর শনাক্ত করা সম্ভব হয় না তখন লাশ পুড়িয়ে ফেলার চেয়ে কবর দেওয়া উত্তম। জনস্বার্থের জন্য গণকবর কোনো সুপারিশকৃত বিষয় নয়।
এতে প্রচলিত সামাজিক গুরুত্বপূর্ণ আদর্শগুলো লঙ্ঘিত হতে পারে। লাশের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় পারিবারিক প্রয়োজন ও সামাজিক রীতির প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো উচিত।