যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে বাংলাদেশি গবেষক শেখ আবির হোসেনকে (৩৮) গুলি করে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন এক তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিয়ান্ডার রবিনসন (১৯) নামের কৃষ্ণাঙ্গ ওই তরুণকে গ্রেপ্তারের পর এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরেক ব্যক্তিকে খুঁজছে পুলিশ।
গত শুক্রবার (গত ২৯ ডিসেম্বর) টেক্সাসের বিউমন্টের একটি দোকানে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন শেখ আবির। তিনি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ঝাপাঘাট গ্রামের মৃত শেখ আজিজুল হাকিমের ছেলে। তিনি টেক্সাসের লামার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সহকারী ছিলেন। পাশাপাশি বিউমন্টের একটি খাবারের দোকানে খণ্ডকালীন কাজ করতেন তিনি। তাঁর স্ত্রী ও এক কন্যাশিশু আছে।
বিউমন্ট পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তা হেলি মরো প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিউমন্টের ক্রিস ফুড মার্টে শুক্রবার রাত ১০টা ৯ মিনিটে (স্থানীয় সময়) আমাদের টিম যাওয়ার পর দেখতে পায় গুলিবিদ্ধ আবির মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। প্রাথমিক তদন্তে সিসি ক্যামেরায় দেখা গেছে, শুধু সিগারেট চুরি করতে গিয়ে আবিরকে গুলি করে হত্যা করা হয়।’
হেলি মরো আরও বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা দেখে সন্দেহভাজন দুজনকে খুঁজতে মাঠে নামে আমাদের টিম। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয় কিয়ান্ডার রবিনসনকে। আরেক সন্দেহভাজন কালো রঙের জিনস ও হুডি পরা ছিলেন, তাঁকে খুঁজছে পুলিশ।’
আবির হত্যার সংবাদ প্রথম প্রকাশ করে বিউমন্টের কেএফডিএম নিউজ। এই সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক স্কট লরেন্স প্রথম আলোকে বলেন, আবিরের লাশ এখনো পরিবারের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রে এখন ছুটির মৌসুম চলছে। ফলে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মতো পর্যাপ্ত জনবল আপাতত নেই।
এদিকে টেক্সাসের লামার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা আবিরের পরিবারের জন্য ফেসবুকে ‘গো ফান্ড মি’ অ্যাকাউন্ট খুলেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানে সারা বিশ্বের প্রায় ১৪ হাজার মানুষ ৫৫ হাজার ডলার অনুদান দিয়েছেন।
আবিরের মেজ ভাই শেখ জাকির হোসেন গত রোববার প্রথম আলোকে বলেন, আবির ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় হয়ে স্নাতকোত্তর পাস করেন। এরপর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষক হিসেবে কাজ শুরু করেন। অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক ছিলেন তিনি। ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান তিনি।
শেখ জাকির আরও জানান, আবিরের স্ত্রী সানজিদা আলম মজুমদার তাঁদের একমাত্র শিশুকন্যা আরশিয়াকে (২) নিয়ে নিউইয়র্কে তাঁর মা-বাবার সঙ্গে থাকতেন। আর আবির থাকতেন টেক্সাসে।