সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে রীতিমতো আলোড়ন তৈরি করেছেন বিক্রান্ত ম্যাসি অভিনীতি চলচ্চিত্র ‘টুয়েলভথ ফেইল।’ ফেসবুক, টুইটার কিংবা এক্স (টুইটার), প্রশংসার ফুলঝুড়ি যে চলচ্চিত্রকে ঘিরে, সেটি ‘টুয়েলভথ ফেইল।’ সিনেমাপ্রেমীদের পজিটিভ রিভিউ এবং সমালোচকদের তুমুল প্রশংসায় মনোমুগ্ধকর এক চলচ্চিত্র দিয়েই বছর শেষ করলো বলিউড।
‘টুয়েলভথ ফেইল’ ভারতের চম্বলে বসবাসকারী মনোজ শর্মার গল্প নিয়ে নির্মিত, যিনি বর্তমানে ভারতের একজন সম্মানিত আইপিএস অফিসার। মনোজ ছিলেন অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান।
ওটিটির জনপ্রিয় মুখ বিক্রান্ত ম্যাসি এই সিনেমার মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে তাকে এখন পর্যন্ত কতটা অবমুল্যায়ন করা হয়েছে। সুযোগ পেলে তিনি কি জাদু দেখাতে পারেন, তার এক দৃষ্টান্ত তিনি স্থাপন করেছেন সিনেমাটির মধ্য দিয়ে। চরিত্রটির সঙ্গে তিনি নিজেকে এতটাই মিশিয়ে নিয়েছেন যে বাস্তব জীবনের মনোজকেও টেক্কা দিয়েছেন শতভাগ। সিনেমায় অন্যান্য সবার অভিনয়ও ছিল নজরকারা। অভিনেত্রী মেধা শঙ্কর ছিলেন শ্রদ্ধা জোশির চরিত্রে দারুণ মানানসই। নিজের অভিনয় জাদুতে মুগ্ধ করেছেন বলা চলে। এছাড়াও অনন্ত জোশি, আংশুমান পুস্কার, প্রিয়ানসু চ্যাটার্জি সবাই নিজেদের সর্বোচ্চ অভিনয়শৈলী দেখিয়েছেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
‘টুয়েলভথ ফেইল’-এর অন্যতম প্রধান কারিগর, গুণী নির্মাতা বিধু বিনোদ চোপড়া এটি পরিচালনা করেছেন। কাকে কতটা ব্যবহার করে, কোথায় কতটা কাজ তাকে দিয়ে করাতে হবে, প্রতিটি ধাপে তিনি খুব যত্ন নিয়েই নির্মাণ করেছেন এটি। একজন দরিদ্র ছাত্রের শুন্য থেকে শিকড়ে যাওয়ার লড়াইয়ের মাঝে প্রেমের যে এঙ্গেল তিনি রেখেছেন এবং তা সম্পূর্ণরুপে বাস্তবায়ন করেছেন, তা এক কথায় অনবদ্য। বলতে গেলে বিধু বিনোদ চোপড়ার সেরা সিনেমাগুলির মধ্যেঅন্যতম হয়ে থাকবে ‘টুয়েলভথ ফেইল।’
সিনেমার সবচেয়ে সফল আরেকটি দিক হলো শান্তনু মৈত্রের সংগীত। গল্পের সঙ্গে মানানসই এবং মন ছুঁয়ে যাওয়া ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক। সাউন্ড এবং এডিটিংও ছিল দশে দশ পাওয়ার মতো। আর এটির স্টোরিটেলিং, সেটিও পরিচালকের নিখুঁত কাজের মধ্যে অন্যতম। চমৎকারভাবে গল্পটি উপস্থাপন করেছেন বিধু বিনোদ চোপড়া।
সর্বোপরি ২০২৩ সালের সবচেয়ে দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্র এবং বিগত সময়গুলোতে বলিউডে নির্মিত বায়োপিকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নন্দিত একটি বায়োপিক হিসেবেই জায়গা করে নিয়েছে ‘টুয়েলভথ ফেইল।’ ছাত্রজীবন ও শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে বলিউডে নির্মিত ‘থ্রি ইডিয়টস’ কিংবা ‘ছিচোড়ে’র মতো সিনেমাগুলো কোটি কোটি শিক্ষার্থীর জন্য অনুপ্রেরণার অন্যতম দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। তাই ছাত্রজীবনে নতুন বছরে আপনার মোটিভেশন প্রয়োজন হলে দেখতে পারেন ‘টুয়েলভথ ফেইল।’ সংগ্রাম, কঠোর পরিশ্রম ও মিষ্টি ভালোবাসার গল্পে তৈরী ‘টুয়েলভথ ফেইল’ আপনাকে জীবনপথে উজ্জীবিত করার পাশাপাশি এক বুক প্রশান্তি এনে দেবে, তা বলাই যায়।