সরকারকে বিদায় নিতেই হবে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। দেশের জনগণ এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে কোনো আস্থা পায় না। গণতান্ত্রিক বিশ্ব এই নির্বাচনকে সমর্থন করছে না।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. আবদুল মঈন খান সরকারের উদ্দেশে বলেন, জনগণের সাথে প্রতারণা করে কিছুদিন হয়তো ক্ষমতায় থাকা যাবে। তবে আজ হোক কাল হোক আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় নিতেই হবে। জনগণকে সাথে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা এই সরকারের বিদায় করেই ঘরে ফিরব ইনশা আল্লাহ।
‘প্রহসনের নির্বাচন বর্জন ও সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে জনসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ‘ কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।
এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ- এ্যাব’র সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে ও বিএসপিপির সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বরেণ্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, জিয়া পরিষদের ডা. আবদুল কুদ্দুস, ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, সাবেক যুগ্ম সচিব তপন মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিম, কৃষিবিদ ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান, ড. এমতাজ হোসেন, ড্যাবের ডা. মো. মেহেদী হাসান, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, রফিকুল ইসলাম, ডিইউজের সাঈদ খান, এ্যামট্যাবের দবির উদ্দিন তুষার প্রমুখ।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন এ্যাবের মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাছিন আহমেদ, প্রকৌশলী মো. মোস্তাফা-ই জামান সেলিম, প্রকৌশলী একেএম আসাদুজ্জামান চুন্নু, মৎস্যজীবী দলের অধ্যক্ষ সেলিম মিয়া, ডা. রফিকুল কবির লাবু, ডা. আদনান হাসান মাসুদ, অধ্যাপক ড. শেখ মনির উদ্দিন, অধ্যাপক ড. এম এ করিম, আবদুল্লাহিল মাসুদ, যুবদলের কামাল আনোয়ার আহমেদসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, এই বয়সে আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নাই। আমি বিবেকের তাড়নায় রাজপথে দাঁড়িয়েছি। বাংলাদেশ আজ খাদের কিনারায়। মহান মুক্তিযুদ্ধের যে সনদ সাম্য, আইনের শাসন ও গণতন্ত্র এখানে নেই। পরপর কতগুলো প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। ডাণ্ডাবেরি পড়ে একজন রাজবন্দীর মৃত্যু হয়!
তিনি বলেন, আজকে সবাই চিন্তা করুন ও ভাবুন আমরা কোথায় এসে দাঁড়িয়েছি? মনে রাখতে হবে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমরা সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবো।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে দিলারা চৌধুরী বলেন, এ ধরনের প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করুন। আজকে ড. ইউনূসের মতো ব্যক্তিকে সাজা দেয়া হয়েছে। তাহলে আপনার আমার অবস্থা কোথায়? আপনারা বাংলাদেশকে কোথায় নিতে চান? চলমান আন্দোলন শুধু বিএনপির একার নয়। এটা দেশের সকল জনগণের আন্দোলন।
ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, আমাদের দফা এখন দাবি এক। এই সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। কেননা দেশের মানুষ বিগত কোনো নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। তারা ভোটের স্বাদ পায়নি। অথচ জনগণ ভোট দিতে চায়। সুতরাং আমরা এই সরকারের আসন্ন প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করছি।
সভাপতির বক্তব্যে প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে। এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়া মানে রীতিমতো ডাকাতি। সুতরাং সচেতন দেশবাসী ও সম্মানিত ভোটারদের প্রতি আহ্বান আপানারা ৭ জানুয়ারি ভোট কেন্দ্রে যাবেন না। এই প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করুন। সেইসাথে সরকারের বিদায়ের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।