সাময়িক অস্ত্রবিরতির কোনো চুক্তি গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। তারা বলেছে, স্থায়ীভাবে যুদ্ধবন্ধ এবং গাজা উপত্যকা থেকে সকল ইসরাইলি সৈন্য প্রত্যাহারের আগে তারা কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তি করবে না। প্যারিসে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল, মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানদের বৈঠকে একটি সাময়িক অস্ত্রবিরতি নিয়ে সমঝোতার আভাস সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে হামাস এই ঘোষণা দিলো।
হামাসের সাথে আরেকটি ছোট গ্রুপ পপুলার ফ্রন্ট ফর লিবারেশন অব প্যালেস্টাইন একই বক্তব্য দিয়েছে।
হামাসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা সোমবার রাতে বলেন, তারা গাজায় ‘সম্পূর্ণ ও ব্যাপকভত্তিক যুদ্ধবিরতি’ চান।
হামাস নেতা তাহের আল-নুনু এএফপিকে বলেন, ‘আমরা প্রথমে পূর্ণ ও ব্যাপকভিত্তিক যুদ্ধবিরতি নিয়ে কথা বলছি। আমরা সাময়িক অস্ত্রবিরতি নিয়ে কথা বলছি না।’ তিনি বলেন, যুদ্ধ বন্ধ হলে আমরা বন্দী মুক্তিসহ বাকি বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারব।
এর আগে কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুররহমান আস সানি বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে হামাস তার পূর্ণ যুদ্ধবিরতির শর্ত থেকে ‘সরে’ আসবে। তিনি যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে আশাবাদী বলে জানান। উল্লেখ্য, ইসরাইল সুস্পষ্টভাবে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। ইসরাইল কোনো অবস্থাতেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু হামাস মনে করছে, বেসামরিক নাগরিকদের মুক্তি দেয়া হলে ইসরাইল আরো ভয়াবহভাবে আক্রমণ করবে। এমনকি তাদের বন্দী সৈন্যদের জীবনের ব্যাপারেও পরোয়া করবে না।
বেশ কয়েকটি ইসরাইলি নেটওয়ার্ক এর আগে জানায় যে প্যারিসে রোববার বন্দীদের মুক্তি নিয়ে একটি প্রস্তাবের কাঠামোর ব্যাপারে একমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাতে সিদ্ধান্ত হয় যে তাদের প্রস্তাবটি সোমবারই হামাসের কাছে পাঠানো হবে। তবে হামাস সর্বশেষ যে বক্তব্য দিয়েছে, তা এই প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া কিনা, তা জানা যায়নি।
ইসরাইলের সম্মতি দেয়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে যে প্রথমে নারী, শিশু, বয়স্ক এবং অসুস্থদের মু্ক্তি দেয়া হবে। এ সময় ইসরাইলের হামলা বন্ধ থাকবে। আর ইসরাইল বিপুল সংখ্যক বন্দীকে মুক্তি দেবে, গাজায় আরো বেশি সাহায্য প্রবেশ করার সুযোগ দেবে।
এতে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কোনো কথা নেই। তবে তা প্রত্যাখ্যানও করা হয়নি।
চ্যানেল ১২ অনুযায়ী, প্রস্তাবটিতে ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। এ সময় ৩৫-৪০ জন বন্দীর বিনিময়ে ইসরাইল প্রতি বন্দীর বিনিময়ে মুক্তি দেবে ১০০-২৫০ জনকে। এরপর যুদ্ধবিরতি আরো বাড়বে। এ সময় হামাসের হাতে থাকা প্রতিটি বন্দীর বিনিময়ে আরো বড় অনুপাতে ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বন্দীকে মুক্তি দেয়া হবে।
সূত্র : টাইমস অব ইসরাইল, আল জাজিরা এবং অন্যান্য