যুক্তরাষ্ট্রের মিনিসোটা রাজ্য থেকে নির্বাচিত ইউএস কংগ্রেস সদস্যদের মধ্যে আলোচিত সদস্যদের মধ্যে ইহলান ওমর একজন। ফিলিস্তিনী বংশোদ্ভুত ডেমোক্র্যাট দলীয় মুসলিম এই নারী সদস্য নানা কারণেই আমেরিকান রাজনীতিতে বহুল আলোচিত। তাঁর সম্মানে নিউইয়র্কে আয়োজিত এক ফান্ড রেইজিং অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে দিন দিন মুসলিম কমিউনিটি প্রসারিত হচ্ছে। প্রতিটি রাজ্যে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ছে। আমেরিকা আর বিশ্ব রাজনীতির চলমান পরিস্থিতিতে মুসলিম কমিউনিটিকে টিকে থাকতে হলে সকল মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, মূলধারার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে। এজন্য নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিকল্প নেই।জ্যামাইকার আল মামুর স্কুলে গত ৩ ফেব্রুয়ারী শনিবার সন্ধ্যায় আয়োজিত উল্লেখিত ফান্ড রেইজিং অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক ছিলেন কমিউনিটির পরিচিত মুখ, বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ ভূইয়া এবং আফতাব মান্নান। হোস্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ফান্ড রেইজিং পর্ব পরিচালনা করেন আব্দুল আজিজ ভূইয়া ও আল মামুর স্কুলের ছাত্রী জানাইল কাশারি। খবর ইউএনএ’র।সঙ্গত কারনেই ইউএস কংগ্রেসের আলোচিত মুসলিম এই নারী কংগ্রেসওম্যান ছিলেন অনুষ্ঠানের মধ্যমনি। খুব সাদাসিধে পোশাকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন তিনি। অনুষ্ঠানের মূল পর্বের আগে ও পরে খোলামেলা কথা বলেন আর শুভেচ্ছা বিনিময় করেন কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে। উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী ও পাকিস্তানী কমিউনিটিসহ বিভিন্ন মুসলিম কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন। এই ফান্ড রেইজিং অনুষ্ঠান থেকে প্রায় ৭৫ হাজার ডলার সংগৃহীত হয়েছে বলে সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা গেছে।অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক ষ্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান জোহরান মামদানী সহ অন্যান্যের মধ্যে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার (জেএমসি)-এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও কো হোস্ট ডা. নাজমুল এইচ খান, কো চেয়ারম্যান হাবিব উদ্দিন আহমেদ, জেএমসি’র সভাপতি ডা. মাহমুদুর রহমান, নাসাও কাউন্টির ফাইভ টাউন মসজিদের প্রেসিডেন্ট তানভীর আহমেদ, ইসলামিক সার্কেল অব নর্থ আমেরিকা (ইকনা)-এর সভাপতি তারিকুর রহমান, নিউইয়র্ক মুসলিম ট্রাসফোর্সের সভাপতি ডা. মোহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান, ডা. জাকির সাব্বির, জেএমসি পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারী আফতাব মান্নান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক, ইমিগ্র্যান্ট এল্ডার হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট গিয়াস আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে ইহলান ওমর দৃঢ়তার সাথে আরো বলেন, আমি মুসলমানদের পক্ষে সত্য কথা বলি বলেই আমার বিরুদ্ধে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিশেষ করে রিপাবলিকান পার্টির সদস্যরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, সকল মুসলিম কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যেসব ষড়যন্ত্র হচ্ছে তা মোকাবেলা করতে হবে। তিনি বলেন, মূলধারার রাজনীতিবিদদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হবে। মূলধারায় সম্পৃক্ত হতে না পারলে কোনোভাবেই মুসলমানদের ন্যায্য অধিকার আদায় করা সম্ভব নয়। তিনি আরো বলেন, এই দেশে জন্ম নেয়া এবং বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে মূলধারার রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে হবে।
গাজা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হামাস যখন ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছিল আমরা সেই হামলার নিন্দা জানিয়েছিলাম, কিন্তু মাসের পর মাস যখন ইসরায়েল নিরপরাধ ফিলিস্তিনীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, তখন আমরা মাত্র পাঁচ জন সদস্য নিন্দা জানিয়েছি, অন্যরা সব বিরত থাকছে। উল্টো ইসরায়েলকে অর্থ দেওয়ার জন্য তারা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। যা কাম্য নয়।
অনুষ্ঠানে কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে আয়োজক কমিটির কো হোস্ট আমীর খান, ডা. আতাউল ওসমানী, ডা. এম পাটোয়ারি, সায়েদ রহমান, মাহবুবুর রহমান, সায়েদ মুজাফ্ফর, আক্তার শাহীন, মোহাম্মদ হাশেম, মোহাম্মদ বেলাল ভুইয়া, খাজা মিজানুল হাসান, ডা. সিদ্দিকুর রহমান, ডা. আসাদুর রহমান, ডা. জান্নুন চৌধুরী, জোহেব চৌধুরী, মনজুর চৌধুরী, মোহাম্মদ সোয়েব বখত, আজহার হক, ডা. ইমরান হোসাইন, ডা. আব্দুস সবুর, ডা. মাসুদুর রহমান, সালেহ আহমেদ, একেএম ফজলে রাব্বী, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের জয়েন্ট সেক্রেটারী ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।