লিয়া নামের একজন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত আমেরিকান এসেছিলেন শোক জানাতে। তিনি আনাদোলু নিউজ এজেন্সিকে বলেছেন, “যারা ফিলিস্তিনের সঙ্গে তাদের সংহতি ও সমর্থন দেখিয়েছে, যারা প্রতিরোধ জানাতে চরম পদক্ষেপ নিচ্ছেন, তাদের প্রতি সংহতি ও সমর্থন দেখানোর জন্য এখানে উপস্থিত থাকা তাঁর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।” বুশনেলের মৃত্যু যুদ্ধের গতিপথ পরিবর্তন করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন কিনা জানতে চাইলে, তিনি বলেন, ‘এটাই আশা করেছিলাম।’
টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের সান আন্তোনিও শহরের বাসিন্দা অ্যারন বুশনেল (২৫) স্থানীয় সময় রবিবার দুপুর ১টায়, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ এবং আক্রমণে মার্কিন সমর্থনের প্রতিবাদে ইসরায়েলের দূতাবাসের সামনে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন।
এএফপি জানিয়েছিল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা ফুটেজ অনুসারে, বুশনেল যুদ্ধের পোশাক পরে গায়ে তরল ঢালতে ঢালতে বলেন, তিনি ‘এই গণহত্যায় জড়িত থাকবেন না আর’।
মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের একজন অফিসার গুইলবিউ ধারণা করছেন, বুশনেলের মৃত্যুতে শোক জানাতে ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ জড় হয়েছিলেন। একজন সাবেক সেনা গোয়েন্দা কর্মকর্তা জোসেফাইন গুইলবেউ আনাদোলুকে জানিয়েছেন, তিনি ওহিও থেকে উড়ে এসেছিলেন, কারণ তিনি বিশ্বাস করেন বুশনেলের মৃত্যু বৃথা যেতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, “আমরা আমাদের জীবনে এর আগে এমন কিছু দেখিনি এবং আমাদের সরকার আশা করে, আমেরিকান জনগণ পাঁচ মাস ধরে এই গণহত্যা দেখতে থাকবে এবং আমাদের কোনো মানসিক সমস্যা হবে না। অবশ্যই পুরো বিশ্বজুড়ে মানসিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ইন্টারনেটে যাদের অ্যাক্সেস আছে, এমন যে কেউ আধুনিক দিনের গণহত্যা দেখতে পাচ্ছেন।”
ভার্জিনিয়ার আনানডেলের বাসিন্দা ২২ বছর বয়সী জেনি রোজমেরি বলেন, ‘বুশনেলের মারাত্মক প্রতিবাদ জানিয়েছেন। চরম কাজ কিন্তু নৈতিক একটি কাজ করেছেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের সকলের সেই পরিমান সাহসী হওয়ার উচিত। মার্কিন সরকারের অনেক অজ্ঞতা রয়েছে, তারা মানুষের কষ্ট এবং মৃত্যুর সব ভিডিও এড়িয়ে যেতে পারেন না। কিন্তু আমাদের নিজস্ব একজন ছিলেন, যিনি সামরিক বাহিনীতে ছিলেন এবং আশা করেছিলেন কিছু পরিবর্তন ঘটবে।’
এদিকে হামাস মঙ্গলবার বলেছে, ‘ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসের বাইরে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করা মার্কিন বিমানকর্মীর যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদ অমর হয়ে থাকবে।’ আত্মহত্যার ফুটেজ অনলাইনে ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছে এবং হামাস বলেছে, ‘এ ঘটনা গাজায় ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের প্রতি আমেরিকান জনগণের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের একটি অভিব্যক্তি।’
হামাস ইংরেজিতে জারি করা এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ নিহত মার্কিন বিমানকর্মী আমাদের ফিলিস্তিনি জনগণ এবং বিশ্বের মুক্ত মানুষের স্মৃতিতে অমর হয়ে থাকবেন। তিনি বিশ্বব্যাপী মানবিক সংহতির চেতনার প্রতীক।’
সূত্র: আনাদোলু