২৩ রানের মধ্যেই নেই ৩ উইকেট। সেখান থেকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত কাটিয়েছেন দলের বিপদ। মাহমুদউল্লাহ ফিরলেও মুশফিককে নিয়ে আবারও শক্ত জুটি গড়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এরই মধ্যে তুলে নিয়েছেন ব্যক্তিগত ফিফটি, দলকে দেখাচ্ছেন জয়ের আশা।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২৮ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান। এখন উইকেটে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর (৬৮*) সঙ্গে আছেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম (৩২*)। জয়ের জন্য এখনো ১৩২ বলে দরকার ৯৭ রান।
৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে ২৫৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই লিটন দাসকে হারায় বাংলাদেশ। ২৩ রানের মধ্যেই ফেরেন সৌম্য সরকার ও তাওহীদ হৃদয়। এরপর শান্তকে সঙ্গ দিতে পাঁচে নামেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। নেমেই বাহারি সব শট খেলতে থাকেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। আরেক পাশে শান্ত ছিলেন ধীরস্থির। এই দুজনের জুটি থেকে আসে ৬৯ রান। ৯২ রানে লাহিরু কুমারার বলে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ (৩৯ বলে ৩৯)।
মাহমুদউল্লাহ ফিরলেও অবিচল ছিলেন শান্ত। এ সময় ব্যাটে রানের গতিও বাড়ান বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৫২ বলে তুলে নেন নিজের হাফ সেঞ্চুরি। মুশফিকও আরেক পাশে তাকে দেন উপযুক্ত সঙ্গ। এই দুজনের ব্যাটেই জয়ের আশা দেখছে বাংলাদেশ।
এর আগে, প্রথমে ব্যাট করে তানজিম হাসান সাকিব-তাসকিন আহমেদের তোপে ২৫৫ রানে অলআউট হয় শ্রীলংকা। তবে যেভাবে তারা শুরুটা করেছিল, তাতে অনায়াসেই তিনশ রান চোখ রাঙানি দিচ্ছিল বাংলাদেশকে। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম দলীয় ৫০ রান তারা করে মাত্র ৪০ বলে। ওয়ানডেতে দলে ফেরা পাথুম নিশাঙ্কা আর টি-টোয়েন্টি সিরিজে রান তুলতে ব্যর্থ আবিষ্কা ফার্নান্দো ছিলেন হাতখোলা। এই দুজনের ঝড় থামে দশম ওভারের পঞ্চম বলে, শ্রীলংকার রান তখন ৭১। তানজিম হাসান সাকিবের করা দ্বিতীয় ওভারে উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দেন আবিষ্কা। ৩৩ বলে ৫টি চার ও ১ ছক্কায় ৩৩ রান করে ফেরেন তিনি।
প্রথম দশ ওভারে ওই ১ উইকেট হারিয়েই ৭১ রান তোলে লংকানরা। নিজের তৃতীয় ওভারে আবারও সাকিবের আঘাত। এবার স্লিপে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানান নিশাঙ্কাকে। ২৮ বলে ৫টি চার ও ১ ছক্কায় ৩৬ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। সাকিব ‘শো’ সেখানেই শেষ হয়নি। নিজের করা চতুর্থ ওভারেও উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি। দলীয় ১৪তম ওভারের প্রথম বলে নতুন নামা সাদিরা সামারাবিক্রামাকেও উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন। উড়তে থাকা শ্রীলংকা হঠাৎ ৩ উইকেট হারিয়ে হয়ে পড়ে দিশেহারা।
চতুর্থ উইকেটে ৪৪ রানের জুটি গড়েন মেন্ডিস ও লিয়ানাগে। এই দুজন বেশ ধীরগতিতে রান করেছেন। ১২৮ রানের মাথায় মিরাজের দুর্দান্ত এক বলে বোল্ড হন আসালঙ্কা। এরপর মেন্ডিসের সঙ্গে জুটি বাঁধেন লিয়ানাগে। তিনি ব্যাটিংয়ে নামার পরই চিত্র বদলে যায়। দারুণ স্ট্রাইকে রান তুলতে থাকেন তারা। ৬৮ বলে ৬৯ রানের জুটি গড়ে ১৯৭ রানের মাথায় ফেরেন মেন্ডিস। ততক্ষণে হাফ সেঞ্চুরি হয়ে গেছে তার। এরপরে উইকেটে নেমে দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দিলেও বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। ২২১ রানের মাথায় তাসকিনের বলে ফেরেন এই তারকা। তবে আরেক পাশে দারুণ খেলতে থাকা লিয়ানাগে ঠিকই দারুণ খেলতে থাকেন। ৭ ম্যাচের ক্যারিয়ারে তুলে নিয়েছেন তৃতীয় ফিফটি। ২২৫ রানে সপ্তম ব্যাটার হিসেবে ফেরেন মহেশ থিকসানা। ২৪৪ রানে লিয়ানাগেকে ফেরান শরিফুল ইসলাম। ৬৯ বলে ৩টি চার ও ২ ছক্কায় ৬৭ রান করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ২৫৫ রানে অলআউট হয় লংকানরা।
বাংলাদেশের হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন তিন পেসার তানজিম হাসান সাকিব, তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম। স্পিনার হিসেবে তাইজুল ইসলাম ব্যর্থ হলেও দারুণ উজ্জ্বল ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১টি উইকেট পেলেও ১০ ওভার বল করে মাত্র ৩৩ রান দিয়েছেন তিনি।