‘কভিড-১৯ প্যান্ডেমিক, পোস্ট প্যান্ডেমিক চ্যালেঞ্জেস, অ্যান্ড পোভার্টি ডাইনামিকস ইন বাংলাদেশ : এভিডেন্স ফ্রম আ লংগিটিউডিনাল হাউসহোল্ড সার্ভে’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, মূল্যবৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা গেছে যে ৭০ শতাংশ পরিবার তাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করেছে, ৩৫ শতাংশ খাদ্যবহির্ভূত ব্যয় হ্রাস করেছে, ২৮ শতাংশ ঋণ গ্রহণ করেছে এবং ১৭ শতাংশ সঞ্চয় হ্রাস করেছে। খাদ্যাভ্যাসের এমন হ্রাসমান তারতম্য পরিবারগুলোকে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকিতে ফেলেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের জরিপের প্রশ্নাবলিতে খানার সাধারণ বৈশিষ্ট্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, সম্পদ, কভিড-১৯ জনিত প্রধান চ্যালেঞ্জ এবং মোকাবেলার কৌশল, সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য, করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের টিকা দেওয়ার সার্বিক চিত্র, অভিবাসন এবং রেমিটেন্সের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলোসহ কভিডপূর্ব, কভিড চলাকালে এবং কভিড-পরবর্তী সময়ে পরিবারের আয় ও ব্যয়ের তথ্যাদি তুলে ধরা হয়েছে।
সেই অনুসারে, সবচেয়ে ধনী ৫ শতাংশের সঙ্গে সবচেয়ে দরিদ্র ২০ শতাংশের ব্যয়ের শেয়ারের অনুপাত ২০২০ সালে ১:৩ থেকে বেড়ে ২০২৩ সালে ২:১-এ দাঁড়িয়েছে। যেহেতু বেশির ভাগ অতিশয় ধনী পরিবারকে সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা যায়নি, বিশেষ করে শহরাঞ্চল থেকে, তাই অসমতার প্রকৃত রূপ এর চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে।
সমীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে এই গবেষণাটিতে পাঁচটি মূল নীতিমালা সুপারিশ করা হয়। প্রথমত, সরকারকে জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল অনুযায়ী সারা দেশে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি চালু করতে হবে। শহুরে দরিদ্র এবং নব্য দরিদ্র পরিবারের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। গৃহস্থালির মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে সরকারকে বিকল্প ও পরিপূরক নীতি গ্রহণ করতে হবে। এর মধ্যে বাজারের ওপর নজরদারি বাড়ানো এবং বাংলাদেশের অনেক প্রধান খাদ্যের আমদানি শুল্ক উদারীকরণ নীতি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। অত্যাবশ্যকীয় খাবারের (যেমন—দুগ্ধজাত খাবার, মাংস, ফলমূল ইত্যাদি) বর্ধিত সরবরাহ বাংলাদেশকে দামের মাত্রা কমাতে সাহায্য করবে। এর সঙ্গে সঙ্গে সহায়ক রাজস্ব ও আর্থিক নীতিমালা পরিপূরক হিসেবে জোরদার করা উচিত।