সরকার বিরোধী দলকে দমনসহ ভাঙতে ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
তিনি বলেন, সরকার হামলা-মামলা ও গুলিকে বিরোধী দল দমনের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার। তবে এসব করেও ৭ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনে দেশের মানুষকে ভোট কেন্দ্রে নিতে পারেনি সরকার। ভয় দেখিয়ে মানুষকে দমিয়ে রাখতে চায়। দেশের জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ করেছে। তারা ভোটকেন্দ্রে যায়নি। কারণ এই ভোটের ওপর তাদের আস্থা নেই। এতেই প্রমাণিত হয় যে সরকারের দেশের মানুষকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে শাসন করা ও ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকার নীতি ভুল। তারা বিরোধী দল দমনসহ বিএনপিকে ভাঙতে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মগবাজারে বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সহ-সম্পাদক হৃদরোগে আক্তান্ত ডা. পারভেজ রেজা কাকনের শারীরিক খোঁজ-খবর নিতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ড. মঈন খান অসুস্থ কাকনের শারীরিক ও পারিবারিক অবস্থান খোঁজ নেন।
গত রোববার সকালে ডা. পারভেজ রেজা কাকন ম্যাসিভ হার্ট এ্যাটাকে আক্রান্ত হন। পরে তাৎক্ষণিকভাবে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে কাকনের হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা তিনটি রিং পরিয়েছেন। গত বুধবার তিনি বাসায় ফেরেন।
এদিকে, আজ বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ ইবনে সিনা হাসপাতালে গিয়ে বিএনপির অসুস্থ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার শারীরিক অবস্থা খোঁজ খবর নেন ড. আব্দুল মঈন খান। রফিকুল ইসলাম মিয়া দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তিনি বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
মঈন খান বলেন, সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের নিরীহ ও নিরস্ত্র নেতাকর্মীদের ওপর টিয়ারশেল ছুঁড়েছে। অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এটা সকলেই জানেন। তবুও নেতাকর্মীরা থেমে যাননি। তারা আন্দোলন চালিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, দল গোছানো ও সংগঠন পুনর্গঠন করা চলমান প্রক্রিয়া। রাজনীতি কোনো কাপড় নয় যে সাজিয়ে গুছিয়ে আলনা বা আলমারিতে রাখা যায়। সরকারকে বলব, প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে আদর্শের রাজনীতিতে ফিরে আসুন। বিএনপি নিয়মতান্ত্রিকভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে ইনশাআল্লাহ।
উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে মঈন খান বলেন, অতীতে কখনই বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হয়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেটা বাদ দিয়ে তা দলীয় প্রতীকে শুরু করেছে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণ আওয়ামী লীগকে বর্জনের পর আওয়ামী লীগ বুঝতে পেরেছে যে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করা হলে দেশের সামাজিক কাঠামোটা ভেঙে যাবে। নিজেদের নৌকা নিজেরাই ডুবিয়েছে। সুতরাং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ছাড়া এই সরকার ও তাদের সাজানো নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না। তবে গ্রামে-গঞ্জে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কে যাবে কে যাবে না সেটা তো বিএনপি দলীয়ভাবে দেখতে পারে না।