জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১৩৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ছিল ৩ উইকেটে ৬২। শেষ ১০ ওভারে ৭৭ রান বেশি রান না হলেও বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখে শঙ্কাই জেগেছিল সমর্থকদের মনে। তবে পঞ্চম উইকেটে সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন তাওহীদ হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ২৮ বলে অপরাজিত ৪৯ রানের জুটিতে এনে দিয়েছেন সহজ জয়। তখনো বাকি ছিল ৬ উইকেট ও ৯ বল। এই জয়ে ৫ ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
এর আগে, ১৩৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দারুণ সূচনা করে বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে ৪১ রানের জুটি গড়েন তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস। ষষ্ঠ ওভারের পঞ্চম বলে তানজিদ ফিরলে ভাঙে এই জুটি। আগের ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ান তানজিদ এদিন ১৯ বলে ১৮ রান করেই বিদায় নেন। এরপর দুই দফায় বৃষ্টি নামায় সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ থাকে খেলা। বৃষ্টি থামার পর দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন লিটন ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। যদিও তাদের ব্যাটিং ছিল বেশ ধীরগতির। ৬১ রানের মাথায় ফেরেন শান্ত। দলের বিপদ বাড়িয়ে আর এক রান যোগ হতে ফেরেন লিটন। শুরুতে ঝোড়ো গতিতে ব্যাটিং শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত ২৫ বলে ২৩ রান করে আউট হন তিনি। এরপরই ম্যাচে বাধ সাধে বেরসিক বৃষ্টি।
কিছুক্ষণ বৃষ্টি থামার পর আবারও শুরু হয় খেলা। এরপর তাওহীদ হৃদয় ও জাকের আলি ৩১ রানের জুটি গড়েন। তবে ৯৩ রানের মাথায় জাকের ফিরলে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। এই সময়ে বল ও জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রানের ব্যবধানও বেড়ে যায়। তবে হৃদয়ের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পঞ্চম উইকেট জুটিতে উড়ে যায় সব ভয়। ২৫ বলে ৩৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন হৃদয়। আরেক পাশে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ছিলেন ১৬ বলে ২৬ রান করে। এই রানের পথে ১০৩ মিটারের বিশাল একটি ছক্কাও হাঁকান তিনি।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে হেরে এদিন প্রথমে ব্যাট করে জিম্বাবুয়ে। প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে রোডেশিয়ানরা। দলটি পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে করে মাত্র ২২ রান। এই সময়ে হারায় তাদিওয়ানাশে মারুমানিকে। ৪ বলে ২ রান করে তাসকিন আহমেদের করা চতুর্থ ওভারের শেষ বলে এলবিডব্লিউ হয়েছেন তিনি। প্রথম ১০ ওভারে দলটি করে মাত্র ৩৮ রান। হারায় ৪ উইকেট।
দলীয় সপ্তম ওভারে ৩০ বলে মাত্র ১৭ রান করে আউট হয়েছেন জয়লর্ড গাম্বি। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে নাজমুল হোসেন শান্তর কাছে ক্যাচ দেন তিনি। দশম ওভারের প্রথম বলে রিশাদ হোসেনের বলে লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। ৮ বলে মাত্র ৩ রান করেন তিনি। একই ওভারে কোনো রান না করেই ফেরেন ক্লাইভ মানান্দে। পরের ওভারে শেখ মেহেদীর বলে ১৬ বলে ১৩ রান করে ফেরেন অভিজ্ঞ ক্রেইগ আরভিনও।
এরপরই দারুণ এক জুটি গড়েন জোনাথন ক্যাম্পবেল ও ব্রায়ান ব্রেনেট। উইকেট তো সুরক্ষিত রেখেছেনই, বাংলাদেশের বোলারদের ওপর চালিয়েছেন পাল্টা আক্রমণ। ৪২ রানে ৫ উইকেট হারানো দলকে নিয়ে গেছেন ১১৫ রান পর্যন্ত। ৭৩ রানের জুটি গড়েছেন মাত্র ৪৩ বলে। ১১৫ রানের মাথায় ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে ফেরেন ক্যাম্পবেল। ৪৫ রান করেছেন তিনি। মাত্র ২৪ বলের ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা। তবে শেষের দিকে একাই লড়াই চালিয়ে যান বেনেট। শেষ পর্যন্ত ২৯ বলে ৪৪ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার তাসকিন। ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তার শিকার ২ উইকেট। সমান ওভারে ২ উইকেট নেওয়া রিশাদ দিয়েছেন ৩৩ রান। একটি করে উইকেট শরিফুল ইসলাম, মেহেদী ও সাইফউদ্দিনের।