বাংলাদেশে এখন প্রতিদিনই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেক মানুষ। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) শুক্রবারের তথ্য অনুযায়ী দেশে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ১৩৪ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৭০৯ জন। মোট ৫ হাজার ৯৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে আক্রান্তের এ তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ সময়ে মারা গেছেন আরো সাতজন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ২০৬ জনে। নতুন করে ১৯১ জন সুস্থ হওয়ায় মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন ২ হাজার ১০১ জন।
কোভিড-১৯-এ মৃত রোগীর তালিকায় পুরুষের সংখ্যা ৭৩ শতাংশ আর নারী মৃত্যুর হার ২৭ শতাংশ।
এদিকে, রাজধানী ঢাকার সাথে এবার করোনার প্রকোপ বেড়েছে চট্টগ্রাম বিভাগেও। করোনা সংক্রমণে লোকাল ট্রান্সমিশন পর্যায় চলছে ঢাকা সিটিতে। জনবহুল ও নমুনা সংগ্রহ সহজলভ্য হওয়ায় শুধু ঢাকায় সিটিতে আক্রান্ত ৫৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ আর সম্পূর্ণ ঢাকা বিভাগে শনাক্ত হয়েছে ৮৪ শতাংশ।
এদিকে, মৃত্যুর সংখ্যাতে এগিয়ে আছে ঢাকা সিটি। ঢাকা সিটিতে এখন পর্যন্ত মোট মারা গেছেন ১০০ জন। আইইডিসিআর প্রকাশিত মোট আক্রান্ত জেলার সংখ্যা বর্তমানে ৬৪টি। অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলায় করোনা তার ছাপ ফেলেছে।
আইইডিসিআর’এ শুক্রবার প্রকাশিত সর্বশেষ জেলাভিত্তিক তথ্য অনুসারে, শুধু ঢাকা বিভাগেই সর্বমোট আক্রান্ত আট হাজার ২৮৯ জন। এর মধ্যে শুধু ঢাকা সিটিতে পাচ হাজার ৮৮৬, নারায়ণগঞ্জে এক হাজার ৭৮, গাজীপুরে ৩২৮, কিশোরগঞ্জে ২০২, মাদারীপুরে ৫৩, মানিকগঞ্জে ২৮, মুন্সীগঞ্জে ১৭৮, নরসিংদীতে ১৬৭, রাজবাড়ীতে ২৩, ফরিদপুরে ২১, টাঙ্গাইলে ৩০, শরীয়তপুরে ৫৫, গোপালগঞ্জে ৪৫, ঢাকার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ১৯৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।
এদিকে, চট্টগ্রামে সর্বমোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন ৫১৪ জন। বিভাগটিতে আক্রান্তের হার ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ। চট্রগ্রাম বিভাগে করোনার হটস্পট চিহ্নিত হয়েছে কুমিল্লা জেলা। কুমিল্লায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৩৫ জন। এছাড়াও চট্টগ্রাম জেলায় ১৪০, কক্সবাজারে ৫৪, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫৬, লক্ষ্মীপুরে ৪৮, বান্দরবান ৪, খাগড়াছড়িতে ২, নোয়াখালীতে ২৩, ফেনীতে ৭, চাদপুরে ৪২ জন আক্রান্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে মারা গেছে সর্বমোট ১০ জন।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিভাগে জামালপুরে ৭৯, নেত্রকোনায় ৬৩, শেরপুরে ২৮, ময়মনসিংহ জেলায় ২০১ জনসহ মোট ৩৭১ জন আক্রান্ত। এখন পর্যন্ত ময়মনসিংহে মারা গেছে মোট ছয়জন।
রংপুরের গাইবান্ধায় ২৪, নীলফামারীতে ৩১, লালমনিরহাটে ৪, কুড়িগ্রামে ২২, দিনাজপুরে ৩১, ঠাকুরগাঁওয়ে ২০, রংপুর জেলায় ৮৯, পঞ্চগড়ে ৯ জনসহ মোট ২৩০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছেন একজন।
এছাড়াও খুলনায় ২০, ঝিনাইদহে ৩৩, যশোরে ৭৫, চুয়াডাঙ্গায় ১৫, বাগেরহাটে ২, মাগুরা ৮, মেহেরপুর ৪, কুষ্টিয়া ২০, সাতক্ষীরা ৪ ও নড়াইলে ১৩ জনসহ মোট ১৯৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর খবর পাওয়া গেছে। খুলনা বিভাগে এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে।
আর বরিশাল বিভাগে জেলায় ৪৭, বরগুনায় ৩৪, পটুয়াখালীতে ২৮, ভোলাতে ৭, ঝালকাঠিতে ১৩ জনসহ মোট ১২৯ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। তবে পিরোজপুরে আক্রান্ত ১০ জন বর্তমানে করোনা মুক্ত হয়ে সুস্থ আছেন।
সিলেটের মৌলভিবাজারে ২৯, সুনামগঞ্জে ৩৫, হবিগঞ্জে ৭০, সিলেট জেলায় ২৭ জনসহ মোট ১৬১ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। সিলেটে এখন পর্যন্ত পাচজনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, রাজশাহী জেলায় ২৬, জয়পুরহাটে ৩৭, বগুড়ায় ১৮, নওগায় ১৭, সিরাজগঞ্জে ৪, নাটোর ১১, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১১ ও পাবনায় ১৬ জনসহ মোট ১৪০ জন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে মোট মৃত্যু চারজন।
করোনাভাইরাসে সারাবিশ্বের সাথে পাল্টে গেছে বাংলাদেশের জীবনযাত্রার চিত্রও। দেশে বর্তমানে সম্পূর্ণ লকডাউন করা হয়েছে প্রায় ৩৯৫টি উপজেলা, ৪৯টি জেলা ও তিনটি বিভাগ।
সূত্র : আইইডিসিআর