নারায়ণগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে জেলার পাঁচটি থানায় আটটি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ নাশকতার অভিযোগে ছয়টি এবং নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মাহমুদুল হাসান ও নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ওবায়েদ দু’টি মামলা দায়ের করেন। এসব মামলায় প্রায় সাত হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার রাতে মামলাগুলো দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ফতুল্লা মডেল থানায় তিনটি, নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় দু’টি এবং সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর ও সোনারগাঁও থানায় একটি করে মামলা।
নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ভাঙচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করায় ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ এনে মামলাটি করা হয়। মামলায় দুই হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে তিন কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায়ও দুই হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
পুলিশের ছয়টি মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা, মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির অনেক নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং সহস্রাধিক ব্যক্তিকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
আসামির তালিকায় নারায়ণগঞ্জ জেলা, মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মী রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে সোমবার রাতে চিরুনি অভিযান চালিয়ে ৭৪ জনকে আটক করে পুলিশ। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সদরে ১১, ফতুল্লায় ১০, সিদ্ধিরগঞ্জে ১২, সোনারগাঁয়ে ১১, আড়াইহাজারে ৮, রূপগঞ্জে ৭ ও বন্দরে ১৫ জন। পরে তাদের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার আদালতে পাঠায় পুলিশ। এর আগে রোববার রাতে ১১৬ জনকে আটক করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার ঘটনায় পুলিশ ছয়টি এবং নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও নারায়ণগঞ্জ ফায়ার স্টেশন থেকে দু’টি মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে আরো ৭৪ জনকে আটক করা হয় বলে জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, যৌথ বাহিনীর পাশাপাশি পুলিশের ১৪২টি পেট্রোল টিম সক্রিয় রয়েছে। টিমগুলো নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা মহাসড়কের চাষাড়া থেকে সাইনবোর্ড, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড থেকে মেঘনা টোল প্লাজা, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুর থেকে আড়াইহাজারের পাচরুখি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে পুলিশের বাড়তি নজরদারি রয়েছে।
তিনি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন চলাচলের সংখ্যা বেড়েছে।