কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে কয়েকদিনের সহিংসতার ঘটনায় সারাদেশে দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সারাদেশের যেসব স্থানে বেশি সহিংসতা ঘটেছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো গাজীপুর।
গত দুই দিনে গাজীপুর মহানগরীর আটটি থানায় মোট ২৮টি মামলা হয়েছে এবং এতে মোট গ্রেফতার হয়েছে ২৩৪ জন।
গাজীপুরের স্থানীয় সাংবাদিক মাসুদ রানা বলেন, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে জামায়াত বিএনপির নেতাকর্মী বেশি। আর কিছু গ্রেফতারকৃতের পরিচয় সুনির্দিষ্টভাবে বলেনি পুলিশ।
তবে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে কিছু ‘শিক্ষার্থী থাকতে পারে, কিন্তু পুলিশ সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলছে না’ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে গতকাল রাতে গাজীপুর সদর থানা ৪৫ জন ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে- এমন একটি খবর জানিয়েছে স্থানীয় সাংবাদিকরা। তবে পুলিশ তা স্বীকার করেনি।
গাজীপুর সদর থানায় পাঁচটি মামলা হয়েছে উল্লেখ করে থানার ওসি রাফিউল করিম বিবিসিকে বলেন, ‘ডুয়েট স্টুডেন্টকে আটক করব কেন? ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় আমরা ওই মামলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪৫ জনকে গ্রেফতার করেছি।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছিল।
কুমিল্লার স্থানীয় সাংবাদিক মাসুক আলতাফ চৌধুরী জানান, গত পাঁচ দিনে সাত মামলায় মোট ১৩৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ এবং তারা ‘সবাই বিএনপি-জামায়াতের সাধারণ কর্মী। তাদের ওয়ার্ড বা ইউনিয়নভিউত্তিক তালিকা করে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
শিক্ষার্থীদেরকে আটক করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আটককৃতদের মাঝে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী না থাকলেও বিএনপি জামায়াতের শিক্ষার্থীরা আছে।’
খুলনার স্থানীয় সাংবাদিক গৌরাঙ্গ নন্দী জানান, আন্দোলন চলাকালীন খুলনা ‘শান্ত’ ছিল এবং সেখানে কোনো ‘সহিংসতা হয়নি’। তারপরও প্রায় সাত থেকে আটটি মামলা হয়েছে।
‘গতরাতেও নয়জন গ্রেফতার হয়েছে। সবমিলিয়ে ৫০ জনের মতো গ্রেফতার হয়েছে।’
রংপুরের স্থানীর সাংবাদিক ফরহাদুজ্জামান ফারুক জানান, সেখানে গত পাঁচ দিনে বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টিসহ মোট গ্রেফতারকৃতের সংখ্যা ১১৬ জন।
সিলেটের স্থানীয় সাংবাদিক আজহার উদ্দিন শিমুল জানান, চলমান আন্দোলনে পুলিশ শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১০টি মামলায় ১১০ জনকে গ্রেফতার করেছে।
এছাড়া বরিশালেও গতকাল সকাল পর্যন্ত ছয়টি মোট ৮৭ জনকে গ্রেফতার হয়েছে। এইসব মামলার মোট আসামির সংখ্যা ১৩০ জন বলে জানিয়েছেন বরিশালের স্থানীয় সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম।
গ্রেফতারকৃতদের মাঝে শিক্ষার্থী আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা ওরা (পুলিশ) বলছে না।’
সূত্র : বিবিসি