বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলম গ্রুপ ও সালমান এফ রহমানের করা অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আজ সোমবার বিএসইসির ইন্সপেকশন, ইনকোয়ারি অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগের পরিচালক মো. মাহমুদুল হক স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় এ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইনের প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বিএসইসির এফডি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মাদ আবুল হাসান, বিএসইসির এসআরআইসি বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম, বিএসইসির এসএমএমআইডি বিভাগের সহকারী পরিচালক অমিত কুমার সাহা এবং বিএসইসির এলএসডি বিভাগের সহকারী পরিচালক তৌহিদুল ইসলাম সাদ্দামের সমন্বয়ে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে অনুসন্ধান কার্য পরিচালনার নির্দেশ প্রদান করেছে বিএসইসি।
অনুসন্ধান কমিটির সদস্যদের এই আদেশ জারির তারিখ থেকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে অনুসন্ধান সম্পন্ন করে, কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে অভিযুক্তদের অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে চার সদ্যসের একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। তদন্ত কমিটিকে সালমান এফ রহমান, তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান ও এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, তার স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, আত্মীয়সহ তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডের ফলশ্রুতিতে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না এ বিষয়ে বিশদ অনুসন্ধান করার নির্দেশনা প্রদান করে কমিশন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সালমান এফ রহমান আশির দশক থেকেই শীর্ষস্থানীয় একজন ঋণখেলাপি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারিতে তার নাম এসেছিল। তবে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ সুবিধা নিয়ে ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম কাটায়। ২০১১ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির পর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে সালমান এফ রহমানের ভূমিকা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, এক সময়ের দেশের শীর্ষ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিকে ২০১৭ সালে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মালিকানা ও ব্যবস্থাপনার নিয়ন্ত্রণ নেয় সদ্য বিদায় নেওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপ। এরপর সাড়ে সাত বছরে নামে-বেনামে ব্যাংকটি থেকে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট রাজশাহীর নাবিল গ্রুপ। এই অর্থ ব্যাংকটির মোট ঋণের এক-তৃতীয়াংশ। ঋণের যে তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে, ব্যাংক থেকে পাচার করা অর্থের প্রকৃত পরিমাণ তার চেয়ে বেশি বলেই মনে করেন কর্মকর্তারা। সংবাদে অভিযোগ করা হয়েছে, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি থেকে টাকা বের করা হয়েছে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম, তার স্ত্রী, মেয়ের স্বামী, আত্মীয়সহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে।