কিশোরগঞ্জ শহরের মাঝে দিয়ে বয়ে যাওয়া নরসুন্দা নদীর কূল ঘেঁষে অবস্থিত ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ১১টি লোহার দানবাক্স খোলা হয়েছে।৩ মাস ১৪ দিন পর আজ শনিবার সকাল ৭টায় এ দানবাক্সগুলো খোলার পর এতে রেকর্ড ২৯ বস্তা টাকা এবং বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনাদানা পাওয়া গেছে।
মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ চার শতাধিক মানুষ ওই ২৯ বস্তা টাকা গণনার কাজে অংশ নিয়েছেন। এবার দানবাক্স খোলার সময় পেরিয়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত একটি টিনের বাক্স বাড়ানো হয়।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক মিজাবে রহমত এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এ সময় বিপুল সংখ্যক সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান জানান, এবার ৩ মাস ১৪ দিন পর আজ সকালে পাগলা মসজিদের ১১টি দানবাক্স খোলা হয়। এতে ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। মসজিদ কমপ্লেক্সের দু’তলায় এনে টাকা গণনার কাজ শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, ৩ মাস পর পর দানবাক্সগুলো খোলা হলেও এবার তিন মাস ১৪ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়। তাই একটি টিনের ট্রাঙ্ক বাড়ানো হয়েছিল। আশা করা হচ্ছে, অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে টাকার পরিমাণ যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি হবে।
টাকা গণনার কাজে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এটিএম ফরহাদ চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষক ও আইসিটি) মহুয়া মমতাজ, রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, সিবিএ নেতা আনোয়ার পারভেজ প্রমুখ অংশ নিয়েছেন।
এর আগে গত ১৭ আগস্ট পাগলা মসজিদের ১০টি দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ৩ মাস ২৬ দিনে ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা পাওয়া যায়। এ ছাড়া দানবাক্সে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনারূপা পাওয়া গিয়েছিল।
মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়ে দান অনুদানসহ সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়।
উল্লেখ্য, ঐতিহাসিক মসজিদকে দৃষ্টিনন্দন ও আন্তর্জাতিক মানের করতে ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগের কথা শুনা যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরেই। যেখানে ৩৫ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। যার নামকরণ করা হবে পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স। এটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। বিষয়টি যাচাই বাছাইয়ের কাজ শেষ না হওয়ায় এখনো তা প্রাথমিক পর্যায়েই রয়েছে।