বাংলাদেশে সাড়ে ৭ লাখ মানুষ অন্ধ। যার প্রায় ৮০ শতাংশ অর্থাৎ সাড়ে ছয় লাখ মানুষ ছানি জনিত কারণে অন্ধত্বের শিকার হচ্ছেন এবং প্রতিবছর প্রায় সাড়ে ২ লাখ মানুষ এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন। এছাড়া দেশে প্রায় ৪০ হাজার শিশু অন্ধ। এর মধ্যে প্রায় ১২ হাজারই ছানি জনিত কারণে। তবে সময় মতো ছানি অপারেশন করে কৃত্রিম লেন্স সংযোজনের মাধ্যমে এসব শিশুর স্বাভাবিক দৃষ্টি ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বিশ্ব দৃষ্টি দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল আই কেয়ার ও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের দেওয়া এক পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে আসে। পরিসংখ্যানে আরও বলা হয়েছে, সারা বিশ্বে তিন কোটি ৬০ লাখ মানুষ অন্ধ। ২১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ মধ্যম ও অতিমাত্রায় ক্ষীণ দৃষ্টি সম্পন্ন অর্থাৎ দূরের জিনিস কম দেখে। ১০০ কোটি মানুষ কাছের স্বল্প দৃষ্টি সম্পন্ন। এর মধ্যে ৮৯ শতাংশ মানুষ মধ্যম এবং স্বল্প আয়ের দেশের।
বাংলাদেশের অন্ধত্বের প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে-ছানি জনিত, দৃষ্টি স্বল্পতা, শিশুদের অন্ধত্ব, ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি, গ্লুকোমা, আঘাত জনিত, বয়সজনিত কারণে রেটিনায় সমস্যা। প্রান্তিক পর্যায়ে চোখের চিকিৎসায় এরইমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের গোপালগঞ্জ জেলাসহ আটটি জেলার ২০টি উপজেলা, উত্তরাঞ্চলের রংপুর এবং রাজশাহীসহ ১০টি জেলার ৩০টি উপজেলায় মোট ৫০টি কমিউনিটি ভিশন সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে এক কোটি ১২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৪৬ জন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সমন্বিত উন্নত চক্ষু চিকিৎসা সেবার আওতায় আনা হয়েছে। শুরু থেকে গত এক বছরে প্রায় দেড় লাখ চক্ষু রোগীকে সরকারি অর্থায়নে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে চোখের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতালের পরিচালক ও ন্যাশনাল আই কেয়ারের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘সারাদেশে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের মাধ্যমে সমন্বিত উন্নত চক্ষু চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম ন্যাশনাল আই কেয়ারের মাধ্যমে চলমান আছে। চোখের ছানি জনিত অন্ধত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে প্রতিটি জেলা হাসপাতালে চক্ষু বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’