বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন এলাকা আগামীকাল শনিবার থেকে আবারো লকডাউন করা হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় কক্সবাজার জেলার কয়েকটি এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেসব এলাকায় সংক্রমণের হার বেড়ে গেছে সেসব জায়গায় লকডাউন কার্যকর করা হবে।
কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপারে এবিএম মাসুদ হোসেন বলেছেন, এই লকডাউন হবে এলাকা-ভিত্তিক। গত বুধবার এক বৈঠকে কক্সবাজারের করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা হয়। এরপর এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।
কক্সবাজার জেলার সিভিল সার্জন মো: মাহবুবুর রহমান বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, পুরো কক্সবাজার পৌরসভা এলাকাকে শনিবার থেকে লকডাউন করা হচ্ছে।
তিনি জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে কক্সবাজার শহরে প্রতিদিনই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩৬ জন পর্যন্ত শনাক্ত হচ্ছে।
সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী পুরো কক্সবাজার জেলায় এখনো পর্যন্ত ৮০০ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে শুধু কক্সবাজার পৌরসভা এলাকাতেই ৩৫০ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
এ কারণেই কক্সবাজার পৌর এলাকার ১২ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০টি ওয়ার্ডকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে কঠোর লকডাউন করা হচ্ছে।
এদিকে পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন জানিয়েছেন, যেসব এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সেখানে যানবাহন চলাচলসহ সকল ধরণের কর্মকাণ্ড সীমিত করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে জরুরী সার্ভিস চলবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
“সরকারি একটা সিদ্ধান্ত আছে রেড,ইয়েলো এবং গ্রিন জোন করা। আমাদের শহরের কিছু এলাকা এবং চকোরিয়ার কিছু এলাকাতে প্রাদুর্ভাব বেশি হচ্ছে। এটা এলাকা কেন্দ্রিক বেশি হচ্ছে” বলেন পুলিশ সুপার মাসুদ হোসেন।
এছাড়া ঢাকা থেকে কক্সবাজার যেসব বাস আসা-যাওয়া করছে সেগুলো চলাচলের ক্ষেত্রে কোন বাধা নেই বলে তিনি জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার বলেন, “আমরা এলাকা ভিত্তিক ম্যাপিং করে ঐ এলাকাগুলোকে কঠোর করবো। ঐসব এলাকায় অনেক কিছু সীমিত করা হবে।”
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, কক্সবাজার জেলায় এলাকা-ভিত্তিক এই লকডাউন আগামী ১৫ দিন বলবৎ থাকবে। পরিস্থিতি উন্নতি হলে তখন লকডাউন শিথিল করা হবে। অন্যথায় লকডাউনের মেয়াদ আরো বাড়ানো হবে।
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ক্যাম্প থাকায় কক্সবাজার জেলাকে কেন্দ্র করে সরকারের বাড়তি নজর রয়েছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এখনো পর্যন্ত ৩১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে দুইজন সুস্থ হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে একজন এরই মধ্যে মারা গেছেন।
কক্সবাজার জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা আশংকা করছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংক্রমণ বেশি ছড়িয়ে গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে,এখনো পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চেয়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যেই সংক্রমণের হার বেশি। বিবিসি