যুক্তরাস্ট্রের পুলিশের হাতে নিহত কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের শেষকৃত্য মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে হিউস্টনের চার্চে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে জড়ো হয় হাজার হাজার মানুষ।
হিউস্টনে বড় হয়েছেন জর্জ ফ্লয়েড। এই শহরে স্থানীয় চার্চের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে তার স্মৃতি। সেই ফাউন্টেন অফ প্রেজ চার্চে রাখা ছিল ফ্লয়েডের দেহ সম্বলিত কাসকেটটি। ফ্লয়েড পরিবারের সকলে এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন হাজার হাজার মানুষ। শোকার্ত ও ক্ষুব্ধ।
সেখানেই জর্জের ভাই ফিলোনিস ফ্লয়েড বলেছেন, ”আমরা নিশ্চয়ই ন্যায়বিচার পাব। পাবই।” বলতে বলতে চোখে পানি এসে গেলো তার।
ফ্লয়েডকে হত্যার প্রতিবাদে অ্যামেরিকার শহরগুলিতে আগের মতোই বিক্ষোভ চলছে। বিশেষ করে পথে নেমেছেন তরুণ ও যুবকরা। পনেরো-ষোল থেকে ৩০-৩৫ বছর বয়সীদের প্রাধান্য বেশি।
নিউ ইয়র্কের বিক্ষোভকারী ভিডাল গুজম্যান নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, ”এটা হলো যুবদের বিপ্লব। আমরা তরুণ, যুব। আমাদের এনার্জি বেশি। আমরা বিশ্বাস করি আমরা যা করছি, ঠিক করছি।”
হোয়াইট হাউসের পাশেও বিক্ষোভ হচ্ছে। তবে সোমবার লোক অনেক কম ছিল। কয়েকশ লোক জমায়েত হয়েছিলেন সেখানে।
অন্যদিকে অ্যামেরিকা জুড়ে পুলিশ সংস্কারের দাবি উঠেছে। প্রতিটি শহরে বিক্ষোভকারীদের অন্যতম দাবি হলো, পুলিশি সংস্কার করতে হবে, দরকার হলে পুলিশ বিভাগই তুলে দিতে হবে এবং তাদের বাজেটে ব্যাপক কাটছাঁট করতে হবে। মার্কিন কংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটরা সোমবার একটা বিল এনেছেন। যেখানে পুলিশি বাড়াবাড়ি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পুলিশ অত্যাচার করলে সহজেই যাতে তা ধরা যায় তার ব্যবস্থা করার কথাও বিলে বলা হয়েছে। বর্তমান আইনে পুলিশ কর্মীরা যে সুরক্ষা পান, সে সবই ব্যাপকভাবে ছাঁটাই করার কথাও বিলে বলা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী বিক্ষোভকারীদের এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, আমেরিকায় পুলিশ অফিসাররা মহান ব্যক্তি। পুলিশ বিভাগের ব্যবস্থাপনায় কোনো গোলমাল নেই। মার্কিন নিরাপত্তা অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকে ট্রাম্প বলেছেন, পুলিশের বাজেট কমানো বা পুলিশি ব্যবস্থা উঠিয়ে দেওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই।
ট্রাম্প নিজের অবস্থানে অনড়। তিনি তার কঠোর অবস্থান থেকে সরতে রাজি নন। আর আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন পুরোপুরি বিক্ষোভকারীদের পাশে আছেন। তার দল পুলিশ সংস্কারের বিলও এনেছে। ফলে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর অবস্থান স্পষ্ট। ট্রাম্প তার কট্টর সমর্থকদের ওপরই ভরসা রেখেছেন। আর বাইডেন চাইছেন, বিক্ষোভকারীদের ভোট।
ফ্লয়েডের গলায় হাঁটু চেপে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে মারার দায়ে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের মামলা সোমবার আদালতে উঠেছিল। মিনিয়াপোলিসের সাবেক এই পুলিশ অফিসারের জমানত ঠিক হয়েছে ১২ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এই মামলায় প্রাক্তন পুলিশ অফিসারের ৪০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। ডয়চে ভেলে