জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনে গতি সঞ্চারিত করেছে আটলান্টায় রেশার্ড ব্রুকস(২৭) হত্যাকান্ড। পুলিশী বর্বরতার বিরুদ্ধে চলমান এই আন্দোলনে প্রবাসীরাও জড়িয়ে পড়েছেন ওতপ্রোতভাবে। নিউইয়র্ক, লসএঞ্জেলেস, আটলান্টা, ফিলাডেলফিয়া, মিশিগানের বাংলাদেশীরা একাকার হয়ে পড়েছেন ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’র সাথে। নাগরিক অধিকার ও মর্যাদার প্রশ্নে সোচ্চা সর্বস্তরের আমেরিকানদের এসব বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিতেও দেখা যাচ্ছে বাঙালিদের। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউজের সামনে তুমুল বিক্ষোভে দাঙ্গা পুলিশ আর নিরস্ত্র জনতা যখন মুখোমুখী, তেমনি স্থানে এক বাঙালি তরুণকে প্রতিবাদে উত্তাল করার একটি প্ল্যাকার্ড হাতে দেখা গেছে। যে দৃশ্য মূলধারার টিভিতেও সকলে দেখেছেন।
ডেট্রয়েট থেকে সাংবাদিক আশিক রহমান জানান, ২৬ মে থেকে চলমান এ বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে মিশিগান স্টেটের হ্যামট্রামক সিটিতে ‘মিশিগান-বাংলাদেশ আমেরিকান ডেমোক্রেটিক ককাস’র উদ্যোগে এক র্যালি ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। মঙ্গলবার বিকাল ৬.৩০ টায় আলাদিন রেস্টুরেন্টের সামনে থেকে র্যালি শুরু হয়ে হ্যামট্রামক সিটি হলে গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশটি পরিচালনা করেন মিশিগান -বিএডিসি’র সভাপতি মুহিত মাহমুদ। প্রধান অতিথি ছিলেন কংগ্রেসওম্যান ব্রেন্ডা লরেন্স। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি গত ২৫ মে কি ঘটেছিল? মিশিগান সহ সকল আমেরিকানই এই হত্যার প্রতিবাদ করছে। আমরা আজকে বলছি গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য। এমনকি আমরা এই হত্যার জন্য শান্তিপুর্ণভাবে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ করছি। আমি আজকে সহ তিনবারের মতো সমাবেশে উপস্থিত হয়েছি। আমি একজন কংগ্রেসের মহিলা সদস্য হিসেবে জনগণের জন্য অনেক দায়িত্ববোধ রয়েছে। আজকের আমেরিকার এই অবস্থা বদলানোর জন্য যুবকরা জড়িত হয়েছে। আমি মনে করি অধিকাংশ পুলিশ সদস্য খুব ভাল, তবে দুএকজনের কারণে আজকের এই অবস্থা। কংগ্রেসওম্যান অভিযোগ করেন, দশকের পর দশক ধরে বর্ণবাদী আচরণ চলছে। এখন থেকে বলব, আর বর্ণবাদী কোন আচরণ না। শুধু একজনের জন্য ন্যায় বিচার না, ন্যায় বিচার হবে সবার জন্য।
সমাবেশে হ্যামট্রামক সিটির মেয়র ক্যারন ম্যাজেস্কি বলেন, আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, আমরা সবাই ন্যায় বিচারের প্রতি ,আমাদের নিজস্ব শহর বা শহরতলীতে বা আমাদের নিজস্ব চেতনায় একটি ন্যায় বিচারের বিশ্ব তৈরির জন্য প্রতিশ্রতিবদ্ধ। তবে এটি সহজ কাজ নয়। আমাদের নিজস্ব ইতিহাস, নিজের ত্বক, আমাদের সময় পাশাপাশি আমরা ভাগ করা মানবতার সদস্য হিসেবেও তৈরি করি, যা আমরা সৃষ্টি করি। ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’- আমরা সকলেই তা বিশ্বাস করি। এখনই সময় আমাদের একসাথে কাজ করার, দৃষ্টান্ত স্থাপন করে একসাথে দাঁড়ানোর।
এই সমাবেশে উপস্থিত থেকে সংহতি প্রকাশ করে আরো বক্তব্য প্রদান করেন ওয়েইন কাউন্টি শেরিফ পুলিশ প্রধান রবার্ট ডানল্যাপ, হ্যামট্রামক সিটি পুলিশ প্রধান এনি ময়সে, ম্যাকম্ব কাউন্টি প্রসিকিউটর প্রার্থি সায়মা খলিল, হ্যামট্রামক সিটির কাউন্সিলম্যান কামরুল হাসান, নাইম লিয়ন চৌধুরী, মোহাম্মদ আল সোমারী, ইয়েন পরোটা, কাজী মিয়া, সাহাব আহমদ সুমিন, ডক্টর নাজমুল হাসান শাহীন, কামাল রহমান, মিশেল অভার অল্টজার, আব্রাহাম আয়েস, জাবেদ চৌধুরী প্রমুখ।