শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৮ অপরাহ্ন

রোগ-ব্যাধিতে পাপমুক্তি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৪ জুলাই, ২০২০
  • ২৪২ বার

সুস্থতা অসুস্থতা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। সুস্থতায় শোকর আর অসুস্থতায় ধৈর্য এ দুটিকে আল্লাহর নিয়ামতে পরিণত করে। এগুলো মানবজীবনের অনুষঙ্গ। মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় নবীদেরও কখনো কখনো রোগ-ব্যাধি দিয়েছেন। তাই কেউ অসুস্থ হলেই এই কথা ভাবা যাবে না যে, এটি তার পাপের ফসল। আমাদের প্রিয় নবী (সা.)-ও মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়েছেন।

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চেয়ে বেশি রোগ যন্ত্রণা ভোগকারী অন্য কাকেও দেখিনি। (বুখারি, হাদিস : ৫৬৪৬)

রোগ-ব্যাধির মাধ্যমে মহান আল্লাহ বান্দার গুনাহ মাফ করে দেন। শুধু রোগ-ব্যাধি কেন মুমিনের যেকোনো দুঃখ-কষ্টের বিনিময়ে মহান আল্লাহ তাকে পাপমুক্ত করেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, মুসলিম ব্যক্তির ওপর যে কষ্ট ক্লেশ, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানি আসে, এমনকি যে কাঁটা তার দেহে ফোটে, এসবের মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন। (বুখারি, হাদিস : ৫৬৪১)

তবে শর্ত হলো, বিপদে আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখতে হবে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৫৫)

আল্লাহ তাআলার এই পরীক্ষার পরিধি হয় মানুষের ঈমানের ওপর ভিত্তি করে। মহান আল্লাহ কখনো কখনো কঠিন বিপদ দিয়েও পরীক্ষা করেন। যার ঈমান যত বেশি তার পরীক্ষাও তত বড় হয়। রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ যে ব্যক্তির কল্যাণ কামনা করেন তাকে তিনি দুঃখকষ্টে পতিত করেন। (বুখারি, হাদিস : ৫৬৪৫)

এই দুঃখ-কষ্টে যারা আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রেখে ধৈর্যধারণ করে, আল্লাহ তাদের সওয়াবও বাড়িয়ে দেন। আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে গেলাম। তখন তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি তো ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত। তিনি বললেন, হ্যাঁ। তোমাদের দু’ব্যক্তি যতটুকু জ্বরে আক্রান্ত হয়, আমি একাই ততটুকু জ্বরে আক্রান্ত হই। আমি বললাম, এটি এ জন্য যে, আপনার জন্য দ্বিগুণ সওয়াব। তিনি বললেন, হ্যাঁ তাই। কেননা যেকোনো মুসলিম দুঃখ-কষ্টে পতিত হয়, তা একটা কাঁটা কিংবা আরো ক্ষুদ্র কিছু হোক না কেন, এর মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহগুলোকে মুছে দেন, যেমন গাছ থেকে তার পাতাগুলো ঝরে পড়ে। (বুখারি, হাদিস : ৫৬৪৮)

তাই প্রতিটি মুমিনের উচিত দুঃখ-কষ্ট ও রোগ-ব্যাধিতে হতাশ না হয়ে মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রাখা। তাঁর কাছে সাহায্য চাওয়া। নিশ্চয়ই তিনি যা করেন, আমাদের কল্যাণের জন্যই করেন। আমরা যেহেতু দুর্বল বান্দা, পরীক্ষা দেওয়ার শক্তি রাখি না, তাই আমাদের উচিত মহান আল্লাহর কাছে সুস্থতার নিয়ামতের দোয়া করা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুস্থ রাখুন। আমিন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com