রাজধানীর ওয়ারীতে লকডাউন শুরু হওয়ার পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বিরক্তি প্রকাশ এবং বাহিরে বের হওয়ার প্রবণতা দেখা গেলেও লকডাউনের চতুর্থ দিনে আজ মঙ্গলবার দেখা গেছে একটি সুশৃংখল পরিবেশ। লকডাউনকৃত এলাকায় বের হতে দেখা যায়নি সাধারণ কোনো মানুষকে। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সাময়িক অসুবিধা হলেও বৃহত্তর স্বার্থে সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন তারা।
লকডাউন পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দারা কেমন আছেন তা জানতে চাইলে স্থানীয় বাসিন্দা ও স্থানীয় আল আজিজ ড্রাগ হাউসের মালিক মো: আলম সর্মা নয়া দিগন্তকে বলেন, লকডাউন শুরুর দিকে কিছুটা বিশৃংখলা দেখা গিয়েছিল। অনেক বাসিন্দার মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গিয়েছে। তবে এখন আপাতত একটি সুশৃঙ্খল পরিবেশে লকডাউন চলছে।
তিনি আরো বলেন, লকডাউন পরিস্থিতিতে যুক্তিসঙ্গত কারণ যেমন, ওষুধ বিক্রেতা, জরুরি সংস্থায় কর্মরত ব্যক্তিবর্গ যৌক্তিক কারণে দিনে একবার বের হতে পারছেন। আর যারা বাড়ির ভেতরে আছেন তাদেরকে সকল প্রকার সেবা দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবীরা।
জয়কালী মন্দির মোরে হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনের ফার্মেসির মালিক ডা: মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা নির্ধারণ করে ওয়ারীতে লকডাউন দিয়েছেন। আমরা আমাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সরকারের সেই নির্দেশ মেনে চলছে। লকডাউন শুরুর দিকে কিছুটা সমস্যা সৃষ্টি হলেও এখন আপাতত স্থানীয় বাসিন্দারা মানিয়ে নিয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবক হেলাল উদ্দিন বলেন, লকডাউন শুরুর দিকে স্থানীয় বাসিন্দারা কিভাবে কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করবে, কোন সাইডে আক্রান্ত বেশি কিংবা রাস্তায় বের হয়ে হাঁটাহাঁটি করা যাবে কিনা, এসব সাধারণ তথ্য সম্পর্কে সবার জানা ছিল না এবং মানুষ কীভাবে এতদিন ঘরে থাকবে তা নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে গিয়েছিলো। তাই শুরুর দিকে কিছুটা বিশৃংখল পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা এখন সবকিছু মানিয়ে নিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও কাপ্তান বাজার রোডে কনফেকশনারী দোকানদার আবুল হোসেন মুঠোফোনে নয়া দিগন্তকে বলেন, প্রায় এক মাস লকডাউন থাকার কারণে আমাদের ব্যবসায় অনেক লোকসান হবে। সমস্যাটা দাঁড়িয়েছে এখানে যে, লকডাউনের সময়টাতে আমাদের আয় না থাকলেও ব্যয় ঠিক আগের মতোই রয়েছে। ফলে আমাদের আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তারপরও সরকারের নির্দেশে সেটা তো মেনে চলতে হবেই। তবে এই এক মাস সরকার যদি বাড়ি ভাড়া মওকুফ করে দিতো তবে এখানে বসবাসরত ভাড়াটিয়াদের বড় একটা সুবিধা হতো।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে রেড জোন ঘোষণা করে লকডাউন করা হয়েছে রাজধানীর ওয়ারী এলাকাকে। গত শনিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া লকডাউন চলবে ২১ দিন।