রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিমকে সাত দিনেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাহেদ কোথায় তা নিয়ে তৈরি হয়েছে এক ধরনের ধোঁয়াশা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বইছে সমালোচনার ঝড়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম আমাদের সময়কে বলেন, ‘সাহেদকে গ্রেপ্তারে আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আশা করছি শিগগির ভালো খবর দিতে পারব।’
এদিকে সাহেদের নামে এখন পর্যন্ত ৫৬টি মামলার সন্ধান মিলেছে। হত্যা, অপহরণ, ব্যাংক ঋণ জালিয়াতি, হুমকি, প্রতারণা, নারী নির্যাতন- কী নেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ। একজন মানুষের নামে এতগুলো মামলা থাকার পরও কীভাবে তিনি দিব্যি স্বাভাবিক জীবন যাপন করছিলেন; কাদের প্রশ্রয়ে ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে- এসব প্রশ্ন সামনে চলে এসেছে। তবে দেরিতে হলেও এসব মামলার তদন্তের গতিপ্রকৃতি অনুসন্ধানে কাজ শুরু করেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। সাহেদকে গ্রেপ্তারের পরই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাদের এ অনুসন্ধান।
রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযানের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই সাহেদের কাছে প্রতারিত ব্যক্তিরা র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তাদের বর্ণনায় বেরিয়ে আসছে তার ভয়াবহ সব প্রতারণার গল্প। সাহেদের পাসপোর্ট জব্দ করা হলেও সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে দেশত্যাগের আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা। এ জন্য সীমান্ত এলাকায় আগেই বৃদ্ধি করা হয়েছে নজরদারি।
আভিযানিক টিমের সদস্যরাও সীমান্ত এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছেন। বিশেষ করে প্রতারক সাহেদ প্রতিবেশী একটি দেশ হয়ে অন্য দেশে যাওয়ার পাঁয়তারা করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
রাজধানীর উত্তরার কোভিড ডেডিকেটেড রিজেন্ট হাসপাতালে গত ৬ জুলাই অভিযান চালান র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযান পরিচালনাকালে উঠে আসে হাসপাতালটির অনিয়মের ভয়াবহ সব তথ্য। পরীক্ষা না করেই দেওয়া হতো করোনা পজিটিভ কিংবা নেগেটিভ রিপোর্ট। পরে রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুরের শাখা দুটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে করোনা চিকিৎসার নামে প্রতারণাসহ নানা অভিযোগে সাহেদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করে র্যাব। এ ঘটনায় নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও সাহেদ পলাতক রয়েছে। রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে।