করোনা টেস্ট কেলেঙ্কারির পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। যাদের নিয়ে কথা হয়েছে অনেক, কিন্তু ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সামান্যই। বছরের পর বছর ধরে তারাই সব কিছুর নিয়ন্ত্রণকর্তা। আর্থিক দুর্নীতি ছাড়াও রাজনৈতিক আর অন্যান্য প্রভাবও রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। রিজেন্ট হাসপাতালের শাহেদ এবং জেকেজির সাবরিনা আরিফ ও আরিফুল হক চৌধুরী যে পথে কাজ ভাগিয়ে নেন।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হকও সিন্ডিকেটের কথা কবুল করেছেন। তিনি বলেছেন, একটি শক্ত সিন্ডিকেট আছে, যার সঙ্গে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের লোকজনও জড়িত৷ জার্মান ভিত্তিক ডয়চে ভেলে এর এক রিপোর্টে মন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে। ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চলতি বছরের মে মাসে পাঠানো এক নথিতে দেখা যায়, গত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে মিঠু নামে একজন এই সিন্ডিকেটের মূল নেতৃত্বে৷ মিঠু এখন দেশের বাইরে৷ তবে তার নিয়ন্ত্রণেই এখনো সিন্ডিকেট চলে৷ ওই নথিতে সিন্ডিকেটের অংশ হিসেবে একজন সাবেক মন্ত্রী, একজন বর্তমান মন্ত্রী, তার পিএস ও তার ছেলের নামও রয়েছে৷ নাম রয়েছে একজন অতিরিক্ত সচিবেরও৷ বর্তমান মন্ত্রী, তার পিএস এবং মন্ত্রীর ছেলে এই সময়ে নানা অর্ডার ও কেনাকাটায় প্রভাব খাটাচ্ছেন বলে নথিতে বলা হয়েছে৷
ওদিকে, বর্তমানে করোনা টেস্ট কেলেঙ্কারিতে নতুন করে দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক প্রভাবের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বিবিসি বাংলাকে বলেন, যেহেতু রাজনৈতিক যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে, সুতরাং তারা রাজনৈতিক আশ্রয় এবং প্রশয়ে দুর্নীতি এবং অনিয়মের মতো কাজে জড়িয়ে পড়ে। এবং তারা মনে করে তারা সে সমস্ত কাজ করে পার পেয়ে যাবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র সহকারি পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার সার্বিক বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, বিবৃতি আর শোকজ বসদের ব্যাপার৷ এটা নিয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না৷ তবে মহাপরিচালক তিন দিনের মধ্যে জবাব দেবেন৷ তিনি বলেন, দুর্নীতি অনিয়মের তদন্তে যারা দায়ী হবেন তারা শাস্তি পাবেন৷ আমাদের সবাই খারাপ না৷ আমরা জনগণের সেবায় কাজ করি৷ কিছু আছেন, যারা সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত থাকতে পারেন৷ সরল বিশ্বাসে রিজেন্ট এবং জেকেজিকে কাজ দিয়ে আমরা প্রতারিত হয়েছি।