দেশ ছেড়ে পালানোর সময় নিজের চুল ছোট করে কাটিয়ে নিয়েছিলেন প্রতারক সাহেদ। গোঁফ ফেলে নারীর ছদ্মবেশ নিয়ে সাতক্ষীরার সীমান্ত দিয়ে দেশ ছাড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের চৌকস গোয়েন্দা দলের কাছে তার সব পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
আজ বুধবার ভোর ৫টা ২০ মিনিটে প্রতারণার দায়ে করা মামলার আসামি ও রিজেন্ট গ্রুপের মালিক সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। সাতক্ষীরার শাখরা কোমরপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। নদী পার হওয়ার সময় র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে।
সাহেদের গোঁফ-চুলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার। তিনি বলেন, ‘গত ৯ দিন ধরে তাকে অনুসরণ করা হচ্ছিল। ঘন ঘন অবস্থান পরিবর্তনের কারণে গ্রেপ্তারের খুব কাছাকাছি পৌঁছাতে পারলেও অল্পের জন্য মিস করেছি। পরশুদিন রাত থেকে তাকে অনুসরণ করে গ্রেপ্তার করা হয়। সীমান্ত পার হওয়ার জন্য মাছ ধরার নৌকায় উঠেছিল সাহেদ। নৌকায় ওঠার পর তাকে গ্রেপ্তার করি। সীমান্ত পার হতে স্থানীয় কয়েকজন দালাল তাকে সহায়তা করছিল। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে তিন রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করতে চেয়েছিলেন সাহেদ।’
সাহেদকে গ্রেপ্তারের পর হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পালিয়ে কোথায় কোথায় ছিলেন তা জানান।
জিজ্ঞাসাবাদে সাহেদ জানান, গত ৬ জুলাই যখন রিজেন্ট হাসপাতালে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলে তখন কক্সবাজারের মহেশখালীতে ছিলেন তিনি। সেখানকার স্থানীয় দালালদের সহযোগীতায় একটি সাইক্লোন সেন্টারে ছিলেন। পরে সেখান থেকে চলে যান কুমিল্লার মীরা বাজারে। সেখানে থাকাকালীন র্যাবের গ্রেপ্তার অভিযানের খুব কাছাকাছি চলে আসেন তিনি। কিন্তু র্যাব গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয়।
এরপর ১২ জুলাই ঢাকার গুলশানে আসেন তিনি। এখানে নিরাপদ মনে না করায় চলে যান সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকায়। সেখানে গিয়ে দালালদের মাধ্যমে ভারতে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করতে থাকেন। এর মধ্যেই গোয়েন্দা জালে আটকা পড়ে আজ ভোরে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন তিনি।