শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩২ পূর্বাহ্ন

রংপুর অঞ্চলে কমছে পানি বাড়ছে ভাঙন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০২০
  • ২০৭ বার

তিস্তার পানি কমতে শুরু করলেও ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ। এরই মধ্যে বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধের তিনটি অংশে প্রায় ১৩০ মিটার জায়গা ধসে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘর বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

বুধবার সন্ধ্যায় গঙ্গাচড়ার আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান আকবরিয়া ইউসুফিয়া ডিগ্রি মাদরাসার সামনে তিস্তার স্রোতে ধসে পড়েছে ৬০ মিটার বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, এতে ওই মাদরাসাটিসহ পাশের পাইকান জুম্মাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাউদপাড়া আলিম মাদরাসাসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও হাজার খানেক পরিবারের ঘরবাড়ি ভাঙন হুমকির মুখে পড়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে সেখানে জিওব্যাগ ফেলতে শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এছাড়াও ওই ইউনিয়নের গাটুপাড়ায় ৪০ ও বেরাতি পাড়ায় ৩০ মিটার এলাকার বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধের সিসি ব্লক ধসে গেছে। অন্যদিকে নোহালী ইউনিয়নের ফোটামারি টি হেড গ্রোয়েন ও আলসিয়া পাড়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধ ভাঙনের মুখে পড়ায় সেখানেও জিও ব্যাগে বালু ফেলছে পাউবি।
অন্যদিকে গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের প্রায় ১৫০টি বাড়িঘর ও শত শত একর জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও সড়ক ভেঙে যাওয়ায় গজঘণ্টার ছালাপাক থেকে গাউছিয়া বাজার এবং পূর্ব রমাকাণ্ড থেকে গাউছিয়া বাজার যাওয়ার যোগাযোড় বিচ্ছিন্ন আছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ সঠিকভাবে কাজ না হওয়ায় এই ভাঙন।

পাইকান হাজিপাড়া এলাকার জুয়েল মিয়া জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা নিয়ন্ত্রণ যে প্রতিরক্ষা বাঁধ করেছে সেটির কাজ ভালো হয়নি। তার ওপর এবারের পানি মাদরাসার সামনে এসে এমনভাবে পাক খেয়েছে সে কারণেই প্রায় ৬০ মিটার অংশ ধসে গেছে। তবে সাথে সাথেই পানি উন্নয়ন বোর্ড ঘটনাস্থলে এসে জিওব্যাগ ফেলা শুরু করেছে। সে কারণে এখন পর্যন্ত এলাকাটি রক্ষা পেয়েছে। তবে যদি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না দেয়া যায় তাহলে এই এলাকায় ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি সম্ভাবনা রয়েছে।

একই এলাকার সাজু মিয়া জানান, যখন কাজ করা দরকার। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করে না। যখন ভেঙে যায় তখনে এসে জিওব্যাগ ফেলায়। আমরা গত রোববার বলেছিলাম জায়গাটি ধসে যাবে। কিন্তু তারা আগে এসে কাজ করেনি। বুধবার বিকেলে যখন ধসেই গেলো প্রতিরক্ষা বাঁধ তখন তারা কাজ শুরু করলো।

পাইকান জুম্মাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদ জানান, আমার স্কুলের সামনে বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধে ধস শুরু হয়েছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত কোন জিওব্যাগ ফেলা হয়নি। যদি জিওব্যাগ ফেলা না হয়, তাহলে স্কুলটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।

পাইকান আকবরিয়া ইউসুফিয়া ডিগ্রি মাদরাসার অধ্যক্ষ শাহ মোহাম্মদ বাকের আলী জানান, আমরা ৫ দিন আগ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলে আসছিলাম মাদরাসার সামনে জিওব্যাগ ফেলার জন্য। কিন্তু তারা তা করেনি। সেকারণেই ভাঙন প্রকট আকার ধারণ করেছে। এখন যে গতিতে কাজ চলছে সেটা খুবই ধির। এবং যে পরিমান জিওব্যাগ ফেলার কখা বলা হচ্ছে তাতেও মাদরাসাটি টেকানো যাবে না। তিনি আরও ১০ হাজার জিওব্যাগ মাদরাসাটিসহ এলাকার হাজারখানের পরিবারের বসতভিটা রক্ষায় নদীতে ফেলানোর দাবি জানান।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান জানান, পাইকান মাদরাসার সামনে, গুটিপাড়া এবং বৈরাতিতে প্রায় ১১০ মিটার প্রতিরক্ষা বাঁধের সিসি ধসে গেলে সাথে সাথেই আমরা এ পর্যন্ত ওই তিনটি ভাঙন পয়েন্টে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২ হাজার জিও ব্যাগ ফেলানোর ব্যবস্থা করেছি। আরও ৩ হাজার ব্যাগ প্রস্তুত করা হচ্ছে। এছাড়াও নোহালী মূল রক্ষা বাঁধ রক্ষায় ১৫ হাজার জিওব্যাগ ফেলানো হয়েছে নদীতে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com