করোনাভাইরাসের ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদুর রহমান শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তেজগাঁও থানার প্রতারণা মামলায় দ্বিতীয় দফায় তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী। অপর দিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।
সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে, গত ১৩ জুলাই সাবরিনাকে আদালতে হাজির করে চারদিনের রিমান্ড চেয়েছিল পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেয় গত ২৩ জুন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেকেজি হেলথ কেয়ারের নার্স তানজিনা পাটোয়ারী ও তার স্বামী হুমায়ূন কবিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা ঘরে বসে করোনা টেস্টের রিপোর্ট তৈরি করতেন। পরে পুলিশের কাছে তারা জেকেজির চেয়ারম্যান সাবরিনা ও তার স্বামী এবং হাসপাতালের কর্ণধার আরিফ চৌধুরীর প্রতারণার খবর ফাঁস করে দেন। এরপর ২৪ জুন জেকেজির গুলশান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে প্রতারক আরিফসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দুজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জেকেজির কার্যালয় থেকে ল্যাপটপসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি জব্দ করে পুলিশ। এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় চারটি মামলা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, জেকেজি হেলথ কেয়ার থেকে ২৭ হাজার রোগীকে করোনা টেস্টের রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনা আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ রিপোর্ট প্রতিষ্ঠানটির ল্যাপটপে তৈরি করা হয়। জব্দ করা ল্যাপটপে এর প্রমাণ মিলেছে।
জেকেজির মাঠকর্মীরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, সাভার, কেরানীগঞ্জ ও নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়া মানুষের নমুনা সংগ্রহ করতো। প্রতি রিপোর্টে পরীক্ষার কথা বলে ৫-১০ হাজার টাকা নিতো। আর বিদেশিদের কাছ থেকে নিতো ৮০ থেকে ১০০ ডলার। সেই হিসাবে করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্টে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে পুলিশের ধারণা।