খুলনার খানজাহান আলী থানাধীন মশিয়ালি এলাকায় গুলি ও গণপিটুনিতে ৪ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় অন্যতম গুলিবর্ষণকারী মহানগর ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতা শেখ জাফরিনকে গতকাল শনিবার বিকালে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দাতপুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার কানাই লাল সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
এর আগে শুক্রবার জাফরিনের ভাই গুলিবর্ষণকারী জাকারিয়ার শ্বশুর কোরবান আলী, শ্যালক আরমান ও চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মুজিবর নামে এক ব্যক্তিকে অস্ত্রসহ খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সহপ্রচার সম্পাদক জাকারিয়া এবং তার ভাই জাফরিন ও মিল্টন পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় গ্রামের বেশ কয়েকজন ক্ষুব্ধ হয়ে জাকারিয়ার বাড়িতে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে যায়। জাকারিয়ার সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জাকারিয়া, জাফরিন ও মিল্টন তাদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। গুলিতে নজরুল ইসলাম, গোলাম রসুল, সাইফুল ইসলাম, শামীম, রবি, সুজন, রানা ও খলিলসহ ১০-১২ জন গুলিবিদ্ধ হয়।
গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করে ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নজরুল ইসলাম ও গোলাম রসুলকে মৃত ঘোষণা করেন। খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাত পৌনে ১টার দিকে সাইফুল ইসলামের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর রাত ২টার দিকে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ৩টি মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে আওয়ামী লীগ নেতা জাকারিয়া ও তাদের আত্মীয়স্বজনের বাড়িঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে জাকারিয়ার সহযোগী জাহিদ শেখের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর দলীয় পদ থেকে জাকারিয়াকে বহিষ্কার করে খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগ।
এদিকে এলাকাবাসীর ওপর গুলিবর্ষণকারীরা সন্ত্রাসী এবং সন্ত্রাসীদের কোনো দল নেই উল্লেখ করে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ। বিবৃতিদাতারা হলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, জেলা সভাপতি হারুনার রশীদ ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী।