দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তরুণদের অংশগ্রহণে প্রথমবারের মতো দুদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো ভার্চ্যুয়াল ইয়ুথ পার্লামেন্ট অধিবেশন। গতকাল শনিবার শেষ হয় এই অধিবেশন।
কাজাখস্তানের বানকিমুন ইন্সটিটিউট ফর এসডি এবং কসমস গ্লোবাল নেটওয়ার্কের সহযোগিতায় ইয়ুথ পার্লামেন্টের অধিবেশনের উদ্বোধন ও রাষ্ট্রপতির বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহ আজম শান্তনু। বক্তব্য দেন ইয়ুথ পার্লামেন্টের সাধারণ সম্পাদক বিবেক মোর ও কাজাখস্তানের বানকিমুন ইন্সটিটিউট ফর এসডি’র প্রতিনিধি বিবি আলোমানোভা। অনুষ্ঠানে স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন ওই প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরকার তানভীর আহমেদ তানিম। ডেপুটি স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইয়ুথ পার্লামেন্টের জাতীয় অ্যাম্বাসেডর নওশিন ইয়াসমিন এবং ইয়ুথ ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর মাসুমা আন্নি।
এ সময় প্রধান অতিথি বলেন, ‘কোনো দুর্যোগ তরুণদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। আশা করি, অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমকে সমর্থন জানিয়ে আনিত প্রস্তাবটি বিবেচনা করতে তরুণ সাংসদরা উদ্যোগী হবেন।’
অধিবেশনের সমাপনিতে বক্তব্য দেন কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের পিস বিল্ডিং ট্রেইনার ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের ইয়ুথ লিডার মুরসালিন শাহ, বিতর্ক সংগঠক ও রাজধানীর গ্রিন হেরাল্ড আন্তর্জাতিক স্কুলের সিনিয়র ফ্যাকাল্টি শরিফুল আনোয়ার, ইয়ুথ পার্লামেন্টের সমন্বয়ক রাব্বিল আলামিন প্রমুখ।
দিনব্যাপী ওই অধিবেশনে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার তরুণরা নিজ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাস ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপায়ণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন বিষয়ে নিজেদের অভিমত ও যুক্তির মাধ্যমে সংসদকে প্রাণবন্ত করে তোলেন। বিভক্তি ভোটের মাধ্যমে বাংলাদশের প্রতিটি শিক্ষাস্তরে অনলাইন ক্লাস ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপায়ণে ভুমিকা রাখবে মর্মে আনিত প্রস্তাবনাটি গ্রহণ করা হোক মর্মে ভোটিং অনুষ্ঠিত হয়। ওই ভোটের ফলাফলে অনলাইন ক্লাস ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপায়ণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে প্রস্তাবনাটি সংসদে গৃহীত হয়।
এ ছাড়া অধিবেশনের প্রথম দিন গত শুক্রবার অংশগ্রহণকারী সকল যুব সাংসদদের নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ওই কর্মশালায় উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ইয়ুথ পার্লামেন্টের সাধারণ সম্পাদক বিবেক মোর, প্রধান অতিথি ও বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মেট্রোপলিটান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রধান গাজী শাফিউল হাসান, বিতর্ক সংগঠক ও রাজধানীর গ্রিন হেরাল্ড আন্তর্জাতিক স্কুলের সিনিয়র ফ্যাকাল্টি শরিফুল আনোয়ার, কসমস আন্তর্জাতিকের প্রতিষ্ঠাতা সিঙ্গাপুরের সুনামধন্য উদ্যোগটা মিস পুজা শুকলা এবং ইয়ুথ পার্লামেন্টের সভাপতি সরকার তানভীর আহমেদ তানিম।
ওই কর্মশালায় অতিথিরা সংবিধান ও সংসদীয় ব্যবস্থা, সংসদের কার্যাবলী ও ইয়ুথ পার্লামেন্ট পদ্ধতি, বৈশ্বিক দিক বিবেচনায় ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা এবং অধিবেশনের প্রস্তাবনার ওপরে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়।
ওই আয়োজনের অন্যতম ক্লাব পার্টনার ছিল রাজশাহী কলেজের পায়োনিয়ার ক্লাব এবং মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনসহ সুনামধন্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
বাংলাদেশের প্রথম ভার্চ্যুয়াল ইয়ুথ পার্লামেন্ট অধিবেশনের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহকারী হচ্ছেন, তামান্না মুসতারী (প্রধানমন্ত্রী), শাপলা সুলতানা (সংসদ উপনেতা), ফয়সাল আকাশ (শিক্ষামন্ত্রী), রাব্বিউল জিলানী (আইনমন্ত্রী) ও আলজিদা জামান ঐন্দ্রিলা (চিফ হুইপ)। ছাড়া বিরোধী দলের পক্ষে ছিলেন শাহরিয়ার মনোন (বিরোধী দলীয় নেতা), মুশফিকুজ্জামান আকিব (উপনেতা), মোসা. নিশাত আরা মিতু (চীফ হুইপ), মো. মেসবাহুল ইসলাম ( হুইপ) ও তাসনিম তাহসিন তনু (হুইপ)।
ইয়ুথ পার্লামেন্ট চর্চা একটি বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্য বিষয়, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চর্চা হয়ে থাকে। এ ধরনের মডেল সংসদে একজন তরুণ তার নিজ এলাকার প্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারেন। ইয়ুথ পার্লামেন্ট চর্চা দেশ ও জাতি গঠনে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে বলে বক্তারা দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।