ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মিরে কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকায় শ্রীনগরের ঐতিহাসিক জামিয়া মসজিদে শুক্রবার (১ নভেম্বর) জুমা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়নি। এ নিয়ে একটানা ১২তম শুক্রবার সেখানে জুমা নামাজ হল না। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গত ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মির থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে নেয়ার পরে সেখানে কঠোর বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়।
বৃহস্পতিবার জম্মু-কাশ্মির কেন্দ্রীয় সরকার শাসিত প্রদেশে পরিণত হওয়ায় সেখানে নয়া আইন কার্যকর হয়েছে। কেন্দ্রশাসিত নয়া প্রদেশে পরিণত হওয়ার পর প্রথম দিন ছিল শুক্রবার। যদিও বিগত জুমাবারের ন্যায় শুক্রবারও প্রশাসন ঐতিহাসিক জামিয়া মসজিদে জুমা নামাজ আদায়ের অনুমতি দেয়নি।
এ প্রসঙ্গে শুক্রবার ‘অল ইন্ডিয়া সুন্নাত অল জামায়াত’-এর সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুল মাতীন বলেন, ‘কাশ্মির পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। কাশ্মিরের বড় বড় জামে মসজিদগুলোতে পর পর ১২ সপ্তাহ (৩ মাস) বা বারোটা জুমা নামাজ হয়নি। অথচ তারা (কেন্দ্রীয় সরকার) বলছে যে, কাশ্মিরে শান্তি ফিরছে! এটা অত্যন্ত ব্যর্থতা তাদের। কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মিরে শান্তি ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছে। আগামী জুমায় যাতে সেখানকার বড় বড় জামে মসজিদগুলোতে মুসুল্লিরা জুমা নামাজ পড়তে পারে কেন্দ্রীয় সরকার তার ব্যবস্থা করুক।’
কাশ্মির থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করা প্রসঙ্গে মুফতি আব্দুল মাতীন বলেন, ‘৩৭০ ধারা যেটা তুলে দিয়েছে সরকার, আমি বলব এটা কাশ্মিরের জনগণের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার ‘চরম বিশ্বাসঘাতকতা’ করেছে। কিন্তু সে যা-ই করুক সেখানে শান্তি ফেরাবার দায়িত্ব তাঁদের। অবিলম্বে যাতে কাশ্মিরে শান্তি ফেরে, সেখানকার মানুষ আজও মোবাইল-ইন্টারনেট পরিসেবা পাচ্ছে না। এ নিয়ে গোটা বিশ্ব তাকিয়ে আছে। ভারতের গণতন্ত্র বিপন্ন। কাশ্মির ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সুতরাং, দেশ থেকে সেটাকে বিচ্ছিন্ন করে রেখে দেয়াটা চরম অমানবিক। সেখানকার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা যাতে ফিরে আসে সেজন্য কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত সে ব্যাপারে চেষ্টা করা এবং আগামী সপ্তাহে সেখানে বড় বড় মসজিদগুলোতে মুসুল্লিরা জুমা নামাজ পড়তে পারে সে ব্যাপারে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।’
শুক্রবার সহিংস বিক্ষোভের আশঙ্কায় শ্রীনগরের ঐতিহাসিক জামিয়া মসজিদসহ অন্য বড় মসজিদে নামাজ পড়তে প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর পাশাপাশি কাশ্মির উপত্যকায় স্পর্শকাতর এলাকায় আংশিক বিধিনিষেধের মধ্যে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে লোকেদেরকে নিজ নিজ এলাকার মসজিদগুলোতে জুমা নামাজ আদায়ের আবেদন জানানো হয়। কিন্তু শ্রীনগর ও এর আশেপাশে যেখানে জামিয়া মসজিদ রয়েছে সেই এলাকায় সহিংস বিক্ষোভের আশঙ্কায় মুসল্লিদের এক জায়গায় জড়ো হতে নিষেধ করা হয়।