শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:২৯ পূর্বাহ্ন

পেঁয়াজের খুচরা বাজারে দামের ফারাক ৩০ টাকা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ১৯৩ বার

গত সপ্তাহে হঠাৎ লাফিয়ে বেড়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম পাইকারি বাজারে কমতে শুরু করেছে। গত দুই দিনে দাম দুই দফায় ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। কিন্তু খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। ফলে পাইকারি ও খুচরা বাজারে দামের ব্যবধান বেড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি ও খুচরা দামের এ ব্যবধান ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত ঠেকেছে।

শ্যামবাজারের পাইকারি প্রতিষ্ঠান মিতালী বাণিজ্যালয়ের ব্যবসায়ী কানাই সাহা জানান, পাইকারিতে দেশি পেঁয়াজের দাম গত মঙ্গলবারের তুলনায় ১৫ থেকে ২০ টাকা কমেছে। শ্যামবাজারে দেশি পেঁয়াজ এখন ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজের দামও ১০ টাকা কমেছে; প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকায়।

কারওয়ানবাজারেও পেঁয়াজের দাম কমেছে বলে জানান বাজারের পাইকারি প্রতিষ্ঠান লাকসাম বাণিজ্যালয়ের ব্যবসায়ী মো. হাবিবুর রহমান। তিনি জানান, দেশি কিং পেঁয়াজের প্রতি কেজি এখন ৮০ টাকা ও পাবনার পেঁয়াজ ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

হাবিবুর রহমান বলেন, ৮০ থেকে ৮২ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজের বস্তা (৬০ কেজি) কিনে তা দোকানে নিতে প্রতি কেজিতে বাড়তি ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকা খরচ হয় খুচরা বিক্রেতাদের। সব মিলিয়ে তা ৯০ থেকে ৯৫ টাকার মধ্যে বিক্রি করার কথা। এর বেশি দাম নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। কারওয়ানবাজারের খুচরা দোকানগুলোয় দেশি কিং পেঁয়াজ এখন ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

অথচ খুচরা দোকানগুলোয় দেখা গেছে তার ব্যতিক্রম। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার খুচরা দোকানে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকা কেজি। কারণ জানতে চাইলে বরাবরের মতো একই ব্যাখ্যা তুলে ধরেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, এখন যে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে তা আগের কেনা। তাই দাম বেশি।

মালিবাগ মোড়ের খুচরা বিক্রেতা মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ৯০-৯৫ টাকা কেজি দরে কেনা পেঁয়াজ এখনো বিক্রি করছি। তাই ১০০ টাকার নিচে বিক্রি করা সম্ভব নয়। অনেক দোকানে বাছাই করা ভালো মানের পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নতুন পেঁয়াজ কিনলে পরে কম দামে বিক্রি করতে পারব।

এদিকে মালিবাগ বাজারের খোরশেদ বাণিজ্যালয়ের পাইকারি ব্যবসায়ী মো. শাহবুদ্দিন বলেন, খুচরা বিক্রেতারা আমাদের কাছ থেকে এক-দুই বস্তা করে পেঁয়াজ কেনেন। বিক্রি শেষ হলে আবার কেনেন তারা। তাতে গত সোমবারের পেঁয়াজ খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে এখনও থাকার কথা না।

এদিকে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, যথাযথ বাজার মনিটরিং না থাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সুযোগে ফয়দা লুটছেন ব্যবসায়ীরা। এতে বিভিন্ন পর্যায়ে পণ্যের দামেও ভারসাম্যহীনতা দেখা দিচ্ছে।

কনসাস কনজুমার্স সোসাইটির (সিসিএস) নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, বাজার মনিটরিংয়ে ঘাটতি থাকায় বিভিন্ন পর্যায়ে পণ্যের দামে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হচ্ছে। এতে অসাধু ব্যবসায়ীরা খেয়াল-খুশিমতো ফায়দা লোটার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ ভোক্তা। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে অবশ্যই বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করতে হবে।

রাজধানীর বাজারগুলোয় পেঁয়াজের সঙ্গে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে সব ধরনের সবজি। তার ওপর এখনো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪৫ টাকা। দুই সপ্তাহ আগে যা ছিল ১১০ থেকে ১১৫ টাকা।

কাঁচাবাজারে শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০, পাকা টমেটো ১২০ থেকে ১৩০, গাজর ৮০ থেকে ১০০ টাকা। আগের সপ্তাহের মতো উচ্ছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। বরবটির কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা। কাঁচামরিচের ঝাল আগেরই মতো রয়েছে। এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। এ ছাড়া কাঁকরোল, পটোল, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে ৫০, ঝিঙা ৫০ থেকে ৬০ এবং লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি, বাঁধাকপির পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com