উৎসবের মরশুম মানেই ফ্যাশন দেখানোর সুযোগ। তাই পুজো এলেই জামা কাপড়ের দোকান থেকে শুরু করে শপিং মল, সর্বত্রই কেনাকাটা করার হিড়িক পড়ে যায়। দুর্গাপুজোর আগে থেকে শুরু করে ভিড় চলে মোটামুটি জগদ্ধাত্রী পুজো পর্যন্ত। জামা কাপড়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কেনাকাটি চলে অন্তর্বাসেরও। কিন্তু এবছরের চিত্রটা যেন কিছু আলাদা। এবছর নাকি মানুষ অন্তর্বাস কিনছেন না। যেটুকু দরকার, সেটুকুই। তার চেয়ে এক পয়সা বেশি খরচ করতে নারাজ সবাই। এমনই মত ব্যবসায়ীদের।
জানা গিয়েছে, পুরুষ, মহিলা ও শিশুদের অন্তর্বাসের বড় ব্র্যান্ড লাক্স কোজি, ডলার ও রুপার বিক্রি এবছর লক্ষ্যণীয়ভাবে কম। সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উৎসবের মরশুমে বিক্রি তো বাড়েইনি, উলটে উৎসবের মরশুমে যা বিক্রি হয়, তার থেকে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমেছে। সমীক্ষা বলছে, ২০১৪ সালে আন্তর্বাসের ব্যবসা হয়েছিল প্রায় ১৯ হাজার ৯৫০ কোটি। ২০২৪ সালে ব্যবসা ৬৮ হাজার ২৭০ কোটিতে গিয়ে দাঁড়ানোর কথা ছিল। কারণ, মানুষের আয় বাড়ছে। ফলে ব্র্যান্ডেড ও সৌখিন অন্তর্বাসের দিকে ঝোঁকও বাড়ছে। কিন্তু আর্থিক মন্দার কারণে ইদানিং তাতে ভাঁটা পড়েছে। অনেকে তো এর জন্য সরাসরি নোটবন্দি ও জিএসটিকে দায়ি করেছেন।
তবে প্রভাব যে শুধু বড় ব্র্যান্ডের উপর পড়েছে, তা নয়। খুচরো ব্যবসায়ীদের বাজারও ভাল নয়। গত ৬ মাস ধরে অন্তর্বাসের বাজার মন্দা। বিক্রি প্রায় ১০-১৫ শতাংশ বিক্রি কমে গিয়েছে। উৎসবের মরশুমে যেখানে বিক্রি বেশি হওয়ার কথা, সেখানে বিক্রির অধোগতি চলেছে। হোসিয়ারি শিল্প সংগঠনের সভাপতি ও রূপার ম্যানেজিং ডিরেক্টর কে বি আগরওয়াল একথা জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেন, বিক্রি কমে যাওয়ায় স্টক ক্লিয়ার হচ্ছে না। ফলে নতুন করে অন্তর্বাস তৈরিও হচ্ছে না। ফলে অন্তর্বাস প্রস্তুতিও ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমে গিয়েছে। লাক্সের চেয়ারম্যান অশোক কুমার টোডি জানিয়েছেন, মন্দা চলছে উৎসবের মরশুমের আগে থেকেই। ৬ মাস আগেই অন্তর্বাস বিক্রি প্রায় ৪০ শতাংশ পড়ে গিয়েছিল। সেই রেশ এখনও বজায় রয়েছে। এখনও প্রায় ২৫ শতাংশ কম বিক্রি হচ্ছে। উৎসবের মরশুমেও আশার আলো খুঁজে পাচ্ছেন না হোসিয়ারি ব্যবসায়ীরা।