গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে জনগণ এখন ‘ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে আজ সোমবার দুপুরে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে জিয়াউর রহমান ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনামূলক নাটক নির্মাণের প্রতিবাদে এই মানববন্ধন হয়। বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে কয়েক হাজার নেতাকর্মী এই মানববন্ধনে অংশ নেন।
গয়েশ্বর বলেন, ‘গণতন্ত্র যেখানে অনুপস্থিত, যৌনতন্ত্র সেখানে প্রসার লাভ করছে, বিবেচিত হচ্ছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। বাংলাদেশে সবখানে ঘটনা হইছে, সরকারি অফিস-আদালত-স্কুল-কলেজ-মসজিদ-মাদ্রাসা এমন কোনো স্থান নাই, পবিত্র স্থান নাই যেখানে নারীর সম্ভ্রমহানি হয় নাই। তাই বলতে চাই, আজকে জনগণ আর মানববন্ধন দেখতে চায় না, দেখতে চায় প্রাণবন্ধন, আজকে জনগণ মুখে শ্লোগান শুনতে চায় না, অ্যাকশন দেখতে চায়। আজকে আমাদেরকে এই অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক শক্তিকে ডাইরেক্ট অ্যাকশনের মধ্য দিয়েই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে।’
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘জনগণ দেখতে চায় আমরা কী করছি। আমাদের কথা বলার চেয়ে দায়িত্ব হলো কিছু করা। মানুষ এখন মুক্তি চায়, মানুষ এখন শেখ হাসিনার পদত্যাগ চায়। এরশাদের বিরুদ্ধে যেমন আন্দোলনে-মিছিলে একটি বাক্য ছিল- এক দফা এক দাবি এরশাদ তুই কবে যাবি, জনগণের দাবি এক, এরশাদের পদত্যাগ। সেই প্রতিবাদের শ্লোগান আজকে হতে হবে- জনগণের যে দাবি, হাসিনা তুই কবে যাবি। জনগণের দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ। শেখ হাসিনাকে যদি পদত্যাগ করাতে পারেন তাহলে প্রতিদিন এমন ঘটনা ঘটবে না, আর প্রতি ঘটনাই আমাদের ক্ষুব্ধ হতে হবে না, আর আমাদেরকে রোদ্রের মধ্যে কষ্ট স্বীকার করে রাস্তায় প্রতিবাদ করতে আসতে হবে না।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীনদের ইতিহাস বিকৃতির সমালোচনা করে গয়েশ্বর বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে অপমান করা মানে মুক্তিযুদ্ধেকে অপমান করা, জিয়াউর রহমানকে অপমান করা মানে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা। জিয়াউর রহমানকে যারা অপমান করে বা তার সম্বন্ধে অরুচিশীল বক্তব্য দেয় তার অপরাধ যুদ্ধাপরাধের সমতুল্য। একদিন তাদের বিচার বাংলাদেশের মাটিতে হবেই। সেই দিনটি আমাদের আনতে হবে। সেই দিনটি আনতে পারলে আজকের বিচারপতিরাই ন্যায় বিচার করতে পারবেন, আজকে যারা বিচার বিভাগে আছেন সেদিন তারা সঠিক বিচার করতে পারবেন, আজকে জজ সাহেবরা সেইদিন ন্যায় বিচার করতে পারবেন। তাদের মাথার ওপর যে খড়গ আছে- নাম তার হাসিনা। এটা সরাইয়ে দেন। তাদের (বিচারক) চাকরির ভয় আছে, তাদের জীবনের ভয় আছে। দেখেছেন না এসকে সিনহাকে (সাবেক প্রধান বিচারপতি) কিভাবে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে।’
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় মানববন্ধনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সারোয়ার, আনু মোহাম্মদ শামীম আজাদ, ইয়াসীন আলী, সাদরেজ জামান, আখতারুজ্জামান বাচ্চু, মহানগর দক্ষিণের নজরুল ইসলাম ও উত্তরের গাজী রেজওয়ানুল হোসেন রিয়াজ বক্তব্য দেন।