ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকারকে হুমকি ও নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মুজিবর রহমান চৌধুরীর (নিক্সন) বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন ভবনে এ কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘আমরা জানি, অভিযোগ আছে। অভিযোগটা আমরা সঙ্গে সঙ্গে জেনেছি। কমিশনাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। করণীয় বিষয় নির্ধারণ করেছি। আজকে বা কালকের মধ্যেই করণীয়, যেটা সিদ্ধান্ত নিয়ে, সেটা যাবে। অবশ্যই যে আচরণ সংসদ সদস্য করেছেন নির্বাচন পরিচালনা করার সময়, সেটা কাম্য নয়। আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। আইনে যে রকম বিধিবিধান আছে, তার ব্যাপারে আইনের বিধিবিধান প্রযোজ্য হবে। এতটুকু বলতে পারি।’
এ সময় এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আইনে আছে তার বিরুদ্ধে মামলা করার। আপনারা কী মামলা করবেন? যেহেতু নির্বাচনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনি এ কাজ করেছেন। এর জবাবে নূরুল হুদা বলেন, ‘এখন আমরা দেখি, যদি মামলা করার বিধান থাকে মামলাই করব। আমরা এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি।’
এ সময় নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আইনে যা আছে, যা যা করা সম্ভব, আমরা সবকিছুই করার জন্য প্রস্তুত আছি।’
করোনাকালে হওয়া নির্বাচনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা, জানতে চাওয়া হলে নূরুল হুদা বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্বাচনি কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা বলেছি। এগুলো তাদের নিজেদের ব্যক্তি সচেতনার বিষয়। এখানে আমরা অনুরোধ করি। কিন্তু তারা প্রতিপালন করেন না। শুধু তারা কেন, বাংলাদেশের যেখানেই যাই সেখানেই তো দেখি স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করার বিষয়টা উপেক্ষিতই থেকে যাচ্ছে। আমরা তাদেরকে বারবার অনুরোধ করতে পারি, আশা করি তারা মানবে। এ পর্যায়ে তাদেরকে অনুরোধ করা ছাড়া কিছুই করার নাই।’
এর আগে গত শনিবার চরভদ্রাসনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন পরবর্তী বিজয় সমাবেশে যোগ দিয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসককে হুমকি দেন নিক্সন চৌধুরী। তিনি জেলা প্রশাসকের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি যত বড় উপদেষ্টার নাতি হন না কেন; আপনি নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে চোখ রাঙাইয়া কথা বলবেন না।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ওই জেলা প্রশাসক শেখ হাসিনার চোখ ফাঁকি দিয়ে ১২ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে নৌকার কর্মীদের গ্রেপ্তার করেছেন, পিটিয়েছেন। ওই জেলা প্রশাসক একজন রাজাকার। তা না হলে মাত্র চার ইউনিয়নে ১২ জন ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে আমার নেতাকর্মীদের যেখানে পেয়েছেন সেখানে হামলা করেছেন, পিটিয়েছেন ডিসি।’