কুয়েতে মানবপাচার ও অবৈধভাবে মুদ্রাপাচারের অভিযোগে আটক বাংলাদেশি এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একটি মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন কুয়েতের এমপি সাদাউন হামাদ। দেশটির আরবি দৈনিক আল রাই অনলাইনে প্রকাশিত রিপোর্টে (যা অন্য ইংরেজি দৈনিকগুলোয়ও এসেছে) এ তথ্য জানানো হয়েছে। কাজী পাপুলের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে তাকে অনৈতিকভাবে ব্যবসা পরিচালনায় মদদ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে কুয়েতের দুই সংসদ সদস্য সাদাউন হামাদ ও সালাহ খুরশিদের বিরুদ্ধে।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় সালাহ খুরশিদ বৃহস্পতিবার আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আগামী ৫ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন তাকে আদালতে হাজির করতে কুয়েত পুলিশের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। পাপুলকা-ে কুয়েতের দুই সংসদ সদস্য ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি (এখন বরখাস্ত) মেজর জেনারেল শেখ মাজন আল-জারাহর সম্পৃক্ততার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেয়েছে মামলাটির তদন্তের দায়িত্বে নিয়োজিত ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট সিআইডি। গত ১৭ সেপ্টেম্বর মামলার প্রথম দিনের শুনানিতে কাজী শহিদ ইসলাম অবৈধ মুদ্রাপাচার ও ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।
এমপি সাদাউন হামাদ ও সালাহ খুরশিদ এবং মেজর জেনারেল শেখ মাজন আল-জারাহকে তিনি চেনেন না বলেও আদালতে দাবি করেছিলেন। লক্ষ্মীপুর-২ আসন থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কাজি শহিদ ইসলাম কুয়েতের রেসিডেন্ট পারমিটধারী একজন ব্যবসায়ীও। তার বিরুদ্ধে অবৈধ ব্যবসা এবং জাল-জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে গত ফেব্রুয়ারিতে। তখন তাকে আটকের জন্য কুয়েত সিআইডি অভিযানও চালিয়েছিল। তখন তার দুই সহযোগী গোয়েন্দা জালে আটকা পড়লে তিনি ঢাকায় পালিয়ে নিজেকে রক্ষায় সক্ষম হন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পরে তিনি কুয়েত সিটিতে গেলে (গত ৬ জুন) সিআইডি টিম তাকে তাদের হেফাজতে নিয়ে নেয়। ১৪ জুন তাকে আদালতে উপস্থাপন করলে বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। সেই থেকে তিনি কারাগারে আছেন। দীর্ঘসময় তিনি রিমান্ডে কাটিয়েছেন, সে সময় তার সহযোগী দেশি-বিদেশি রাগববোয়ালদের বিষয়ে বিস্ফোরক তথ্য দিয়েছেন।
যার সূত্র ধরে ডজনখানেক গ্রেপ্তারও হয়েছেন। পাপুল স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও তিনি শাসক দলে এতটাই প্রভাবশালী যে ভোটে তার প্রতিপক্ষ মহাজোট প্রার্থীকে তিনি কৌশলে নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছিলেন। পাপুুল শুধু এলাকায় নয়, কুয়েত আওয়ামী লীগেরও প্রভাবশালী সদস্য, তার আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতাই মুখ্য। এর জেরেই তিনি তার স্ত্রীকে আওয়ামী লীগের মনোনীত সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন নিয়ে এমপি বানাতে সক্ষম হয়েছেন বলে চাউর আছে।