বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নিরবের পরকীয়ার অভিযোগ নিয়ে সুর পাল্টালেন স্ত্রী ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে কী কথা হলো, জানালেন মির্জা ফখরুল ভারত থেকে চিন্ময়ের মুক্তি দাবি কিসের আলামত, প্রশ্ন রিজভীর আইনজীবী হত্যার ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেফতার ৬ : প্রেস উইং চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি দেয়া অনধিকার চর্চা : উপদেষ্টা নাহিদ রয়টার্সের মনগড়া সংবাদের প্রতিবাদ জানালো সিএমপি হাইকোর্টের নজরে ইসকন-চট্টগ্রামের ঘটনা : আদালতকে পদক্ষেপ জানাবে সরকার ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান

‘নিষ্ক্রিয়’ ১৪ দল হতাশ শরিকরা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২ নভেম্বর, ২০২০
  • ২০৫ বার

অনিয়ম-দুর্নীতি ও সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে গঠিত ১৪ দলীয় জোট ‘নিষ্ক্রিয়’ হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে জোটের তেমন কোনো কর্মসূচিও নেই। জোটের নেতার সঙ্গে শরিক দলগুলোর নেতাদের আলাপ-আলোচনাও হচ্ছে না। ফলে শরিক দলগুলোয় বাড়ছে দূরত্ব ও শঙ্কা। এমন অভিমত ১৪ দলের শরিক নেতাদের।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমসাময়িক বিষয়সহ দেশের নানা সংকটে গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে সরকারকে সতর্ক করে দেওয়ার কাজটি ইতিপূর্বে করেছে ১৪ দল। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ সংক্রমণ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, খুন, ধর্ষণের মতো ভীতিকর ঘটনা এবং জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করেও ভূমিকা নেই ১৪ দলের।

এ বিষয়ে জোটের দুই শরিক দলের শীর্ষ নেতা আমাদের সময়কে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটে শরিকদের মূল্যায়নই করা হচ্ছে না। বেশ কিছুদিন ধরে এটি আরও বেশি করে স্পষ্ট হচ্ছে। আওয়ামী লীগ কি আদৌ জোটের শরিকদের প্রয়োজন অনুভব করে কিনা, এ নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ আছে। এ দুই নেতার ভাষ্য, লক্ষ্য থেকে যদি জোট সরে আসে তা হলে জোটে থেকে লাভ কী?

১৩ জুন মারা যান এ জোটের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। এর ২৫ দিন পর জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র করা হয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমুকে।

শরিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমির হোসেন আমু জোটের দায়িত্ব নেওয়ার পর শরিক দলগুলোকে নিয়ে একবারের জন্যও আলোচনায় বসেননি। সাম্প্রতিক সময়ে খুন-ধর্ষণ ইস্যুতে জোটগতভাবে কোনো বিবৃতি বা বক্তব্য না দেওয়ায় ব্যক্তিগতভাবে বিবৃতি দিয়ে জোট নেতারা নিজের অভিমত ব্যক্ত করছেন। এ সময়ে কেন এই স্থবিরতা- এ বিষয়ে ভেতরে ভেতরে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ইতোমধ্যে জোটের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। সম্প্রতি তিনি বলেন, যে উদ্দেশ্য নিয়ে জোট গঠন হয়েছিল, আজ সে অবস্থানে নেই ১৪ দল। কোনো কর্মসূচি না থাকায় জোটে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া আমাদের সময়কে বলেন, ১৪ দল একটি রাজনৈতিক ও আদর্শিক জোট। এই জোট কখনো সক্রিয় থাকে, কখনো নিষ্ক্রিয়। বর্তমান করোনা মহামারী বাস্তবতায় কিছুটা নিষ্ক্রিয় দেখা যাচ্ছে। আশা করি শিগগিরই সক্রিয় হবে জোট। বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া বলেন, ১৪ দলীয় জোট গঠিত হয়েছিল জঙ্গিবাদ, মৌলবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলে গণতন্ত্রের পথ স্বাভাবিক রাখার জন্য। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে জোট সে অবস্থানে ভূমিকা রাখছে না। বর্তমানে যে খুন, ধর্ষণ ও লুটেরা রাজনীতি চলছে, সেখানে ১৪ দল কোনো কথা বলছে না। এতে জোটের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারি বলেন, আমাদের জোটের কাজ হচ্ছে সাম্প্রতিক সংকট নিয়ে কথা বলা। সংকট চিহ্নিত করে গঠনমূলক সমালোচনার মাধ্যমে সরকারকে সহায়তা করা। যেমন সম্প্রতি আলুর দাম বেড়েছে এ বিষয়ে কথা বলা যেত, ধর্ষণের বিরুদ্ধে কথা বলা যেত। তিনি বলেন, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু উদ্যোগ না নিলে তো আমাদের জন্য সেই পরিবেশটা তৈরি হয় না। আশা করছি তিনি শিগগিরই সামনাসামনি বা ভার্চুয়ালি আলোচনার আহ্বান করবেন। আমরা সেখানে নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করব।

জানতে চাইলে আমির হোসেন আমু বলেন, এই পরিস্থিতে কারা কর্মসূচি পালন করছে? ১৪ দলের শরিকরা কি বের হন? তা না হলে কীভাবে কর্মসূচি পালন করব। তা ছাড়া কারও যদি কিছু বলার থাকে, তা হলে বিচ্ছিন্নভাবে না বলে আমাকে তো বলতে পারে।

২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে ১৪ দলীয় জোট গঠন হয়। এ সময় নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সোচ্চার ছিলেন জোটের নেতারা। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল ক্ষমতায় আসার পর জোটের কর্মসূচির পরিবর্তন আসে। আওয়ামী লীগের দুই আমলে শরিক দলের শীর্ষ কয়েকজন নেতা মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়ায় জোটের কার্যক্রম থেকে সরকারের কার্যক্রমে বেশি মনোযোগী হন নেতারা। এর পর ২০১৮ সালে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রিসভায় জোটের কোনো শরিক দলের ঠাঁই মেলেনি। ফলে শরিক দলগুলোর সঙ্গে জোটের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের বাড়ে অভিমান ও মতবিরোধ, যা দৃশ্যমানও হয়। জোটের কার্যক্রম ও সরকারের কার্যক্রমের মধ্যে কোনো ফারাক না থাকায় শরিক দলগুলোর মধ্যে ক্রমেই দূরত্ব বাড়তে থাকে। যদিও সদ্য প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিম সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদসহ নানা ইস্যুতে কর্মসূচি দিয়ে জোটের অবস্থান ধরে রাখেন।

২৩ দফার ভিত্তিতে এ জোট গঠন করা হয়। ২০০৮ সালে নির্বাচনকে কেন্দ্র আরও কয়েকটি দল যুক্ত হয়ে সেটি মহাজোটে রূপ নেয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন করে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে মহাজোট। যদিও এ জোট থেকে নানা সময় অনেক দল বেরিয়েছে, যুক্তও হয়েছে। তবে ভোটের রাজনীতিকে ঘিরে মহাজোটের ভাঙাগড়া চললেও আদর্শিক জোট ১৪ দল এখনো অটুট রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com