যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসের মসনদে আগামী চার বছরের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি জো বাইডেন বসছেন, আজ মঙ্গলবার সে সিদ্ধান্ত নেবেন দেশটির প্রায় ১৫.৩ কোটি নিবন্ধিত ভোটার। করোনাভাইরাসের চলমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি সমুন্নত রাখতে ইতোমধ্যে আগাম ভোট দিয়ে ফেলেছেন ৯ কোটি ২৫ লাখ মার্কিনি। এত বিপুল সংখ্যক ‘পোস্টাল ও আর্লি ভোটিং’ আগে কখনো দেখেনি আমেরিকা।
২০১৬ সালেও আগাম ভোট হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে। সেবার ১৩.৬৫ কোটি ভোটারের দুই-তৃতীয়াংশ আগাম ভোট প্রদান করেছিলেন। দেশটির বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা বলছে, ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী ও বারাক ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দিকেই জয় এগিয়ে যাচ্ছে। এবার বাইডেনের সঙ্গী ভারতীয় বংশোদ্ভূত ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস।
অন্যতম প্রতাপশালী রাষ্ট্রের এ নির্বাচনে পুরো বিশ্ব সাগ্রহে নজর রাখছে। ধনকুবের ট্রাম্প নাকি পুরনো গাড়ির বিক্রয়কর্মীর ছেলে বাইডেন- মার্কিনরা কাকে বেছে নেন, জানার জন্য সবাই যেন মুখিয়ে রয়েছে। রাজনীতির মঞ্চে ‘অতিথি ও আগন্তুক’ ছিলেন যে ট্রাম্প, তিনি তো সব ঝড় সামলে ঠিকই চার বছর দেশ শাসন করলেন। বিশ্বে মোড়লিও কম করেননি। কিন্তু সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনকে হারানো যত সহজ ছিল, এবার ঝানু রাজনীতিবিদ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নেতৃত্ব দেওয়া বাইডেনকে হারানো কি ততটাই কঠিন নয়? সে উত্তর ব্যালটই দেবে, যদিও এরই মধ্যে ব্যালটচুরি, ভোট-জালিয়াতি নিয়ে সংশয়-সন্দেহ প্রকাশ করেছেন মসনদে থাকা ট্রাম্প।
কথিত তৃতীয় বিশ্বের রাজনীতিবিদদের মতো, তিনি ‘দেশ বেচে’ দেওয়ার অভিযোগও তুলেছেন বাইডেনের বিরুদ্ধে। সত্য কি মিথ্যা, সে ভবিষ্যতে দীর্ঘ তদন্তসাপেক্ষ, তবে এবার ভোটে রাশিয়া, ইরান ও চীন হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ষোলোর নির্বাচনে মস্কো মাতব্বরি করে অপকৌশলে ট্রাম্পকে জিতিয়ে দিয়েছিল, এই অভিযোগ তো ছিলই, তদন্তও হয়েছিল। অনুসন্ধানে আর যা-ই বেরিয়ে আসুক, আর যার যে-ই শাস্তি হোক না কেন, ট্রাম্প পাক্কা চার বছর কাটিয়ে দিচ্ছেন।
অন্যদিকে টুইটারে বাইডেন বলেছেন, ‘জাতির জন্য তার প্রধান কর্তব্যই পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন আমাদের প্রেসিডেন্ট। আমাদের সুরক্ষা তিনি দিতে পারেননি। কিছুতেই ক্ষমা করা যায় না।’
আরেকটি টুইটে বলেন, ‘জাতির আত্মাকে বাঁচানোর লড়াইয়ে নেমেছি আমরা। প্রচার শুরুর সময় এ কথা বলেছিলাম। আজ সে কথাটাই আরও জোর দিয়ে বলতে হচ্ছে। কিন্তু অবশ্যই মনে রাখবেন, এই যুদ্ধ অজেয় নয়, আমরা জিতবই।’
জাতীয় জনমত জরিপগুলোয় বাইডেনই এগিয়ে রয়েছেন, শেষদিন পর্যন্ত। ট্রাম্পের সঙ্গে গড়ে ১০ পয়েন্ট ব্যবধানে তিনি এগিয়ে আছেন গত কয়েক মাস ধরেই। কিন্তু ট্রাম্প বলছেন, এসব সমীক্ষা ‘ভুয়া’। অবশ্য জরিপই সব কথা নয়। অন্তত ষোলোর নির্বাচনের দিকে তাকালে বোঝা যায় তা। সেবার জরিপে হিলারি এগিয়ে ছিলেন। আবার জনপ্রিয় ভোটেও ৩০ লাখ মতো ভোট বেশি পেয়েও সাবেক এই ফার্স্ট লেডি হেরে গিয়েছিলেন ট্রাম্পের কাছে। এর কারণ গুরুত্বপূর্ণ কিছু রাজ্য (সুইং স্টেট) যেখানে ইলেকটোরাল ভোট বেশি। এবার এসব রাজ্যে দুই নেতার মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।