বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নিরবের পরকীয়ার অভিযোগ নিয়ে সুর পাল্টালেন স্ত্রী ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে কী কথা হলো, জানালেন মির্জা ফখরুল ভারত থেকে চিন্ময়ের মুক্তি দাবি কিসের আলামত, প্রশ্ন রিজভীর আইনজীবী হত্যার ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেফতার ৬ : প্রেস উইং চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি দেয়া অনধিকার চর্চা : উপদেষ্টা নাহিদ রয়টার্সের মনগড়া সংবাদের প্রতিবাদ জানালো সিএমপি হাইকোর্টের নজরে ইসকন-চট্টগ্রামের ঘটনা : আদালতকে পদক্ষেপ জানাবে সরকার ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান

মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে ভাবছে না আ’লীগ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২০
  • ১৮৯ বার

মধ্যবর্তী বা নির্দিষ্ট সময়ের আগে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে না ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নির্দিষ্ট পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ করেই পরবর্তী নির্বাচন অর্থাৎ আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কিছু কিছু প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে দলটি। সে জন্য তৃণমূলকে ঢেলে সাজাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা। অতীতের দুর্বলতা কাটিয়ে বিএনপিকেও আগামী নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে দেশে সংসদ নির্বাচন হয়েছে ১১টি। এর মধ্যে চারটি নির্বাচন অর্থাৎ পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম ও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি, তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১৯৮৬ সালের ৭ মে, চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১৯৮৮ সালের ৩ মে, পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি, সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন একই বছরের ১২ জুন, অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০০১ সালের ১ অক্টোবর, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি এবং সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।

এর মধ্যে সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সরকার তাদের পূর্ণ পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ করতে সক্ষম হয়। ক্ষমতার মাঝখানে ছন্দপতন হওয়ায় অন্য কেউই নির্দিষ্ট পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি। প্রথম জাতীয় সংসদের মেয়াদ ছিল দুই বছর ৬ মাস ২৯ দিন। পঞ্চম জাতীয় সংসদের মেয়াদ একেবারে কাছাকাছি ছিল ৪ বছর ৮ মাস। সবচেয়ে কম ছিল ষষ্ঠ জাতীয় সংসদের কার্যকাল মাত্র ১২ দিন।

আওয়ামী লীগ শীর্ষ নেতাদের মতে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ তাদের মিত্ররা অংশগ্রহণ করেনি। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে রাজপথে সক্রিয় ছিল। নির্বাচন বানচাল করার জন্য বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়। আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পরও তারা টানা আন্দোলন করেছে, জ্বালাও-পোড়াও করে দাবি তুলেছে মধ্যবর্তী নির্বাচনে জন্য। কিন্তু আওয়ামী লীগ তাদের সহযোগিতা ছাড়াই সরকারের নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ করেছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপি ও তাদের মিত্ররা অংশগ্রহণ করেছে। জনগণ তাদের ভোট দেয়নি, এরজন্য তো আওয়ামী লীগ দায়ী থাকতে পারে না। তারা নির্বাচনে হারলেও তাদের কয়েকজন এমপিতো সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছে। তাহলে মধ্যবর্তী নির্বাচন বা নতুন নির্বাচনের দাবি তারা কিভাবে করে, এটা অযৌক্তিক ও সংবিধান বিরোধী।

দলটির নেতারা মনে করেন, কোনো দেশে মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ পরিস্থিতির কারণে। সেই পরিস্থিতি দেশে এখনো তৈরি হয়নি যে নির্দিষ্ট মেয়াদের আগে নতুন আরেকটি নির্বাচন দিতে হবে। দেশ শান্তিপূর্ণভাবে চলছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনাকালে কিছুটা ঘাটতির মধ্যে পড়লেও অর্থনৈতিকভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্বের অনেক দেশই বাংলাদেশকে এখন অনুসরণ করতে শুরু করেছে।

মধ্যবর্তী নির্বাচন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেন, বিএনপির নির্বাচন ও আন্দোলনের দাবি গত সাড়ে ১১ বছর ধরে শুনতে শুনতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। প্রত্যেক নির্বাচনের আগে ও পরে এগুলো তারা বলে। কিন্তু মানুষের কাছে তাদের দাবি ও হুমকি ফাঁকা বুলি হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি, বিএনপিকে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। তাদের দলের মধ্যে যে অনৈক্য, কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে অনৈক্য, কর্মীদের ওপর আস্থা নেই, তাদের নেতাদের বক্তব্যে সেটা প্রমাণিত হয়েছে। আমরা দেশে একটা শক্তিশালী বিরোধী দল চাই এবং এতে গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়। সে জন্য বিএনপির যে ধরনের ক্ষয়িষ্ণু মনোভাব তা গণতন্ত্রের জন্য ভালো নয়। অনুরোধ জানাবো, তাদের দলের মধ্যে ঐক্য সংহতি ও ভিত শক্ত করে বরং তারা আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেবে। এটি গণতন্ত্রের জন্যও সহায়ক হবে। এ ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়ে বিএনপি নিজেদেরকে দেশের মানুষের কাছে হাস্যাস্পদ করে তোলা, এটাও তাদের জন্য ক্ষতিকর। ড. মাহমুদ বলেন, সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে আগামী নির্বাচন হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য লে. কর্নেল (অব:) ফারুক খান বলেন, আমরা দেশে গণতন্ত্রের চর্চা করি। বিএনপি নিয়মবিরোধী কথা ছাড়া সবই বলতে পারে। দেশে একটা প্রেস ফ্রিডম আছে, তারা নির্বাচনের দাবি করলে করতে পারে। কিন্তু তারা যে দাবি করছে এটা কি বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে? অতীতে বিএনপি এ ধরনের কথা বলেছে, আমরা বিভিন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ পেয়েছি, এমনকি কখনো কখনো বিএনপির অন্তঃদ্বন্দ্বের মাধ্যমে প্রমাণ পেয়েছি, বিএনপির এসব কথা দেশের মানুষ যেমন বিশ্বাস করে না, তাদের অধিকাংশ নেতাকর্মীও এটা বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, তারা এই যে বিভিন্ন সময় মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি করছে এটা সংবিধানবিরোধী। আওয়ামী লীগ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com